স্পোর্টস ডেস্ক।।
বাংলাদেশ দল যখন টেস্ট মর্যাদা পায়, তখনও দেশের ক্রিকেট ছিল ওয়ানডে কেন্দ্রিক। টেস্ট খেলার আগে দুই মৌসুম দীর্ঘ পরিসরের জাতীয় লিগ আয়োজন করা হয়েছিল। যা শুরু হয় তিনদিনের ম্যাচ দিয়ে। পরে টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্তির বছর থেকে চারদিনের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়ায় জাতীয় লিগ।
তাই টেস্ট খেলতে নামার আগে বাংলাদেশের কোন ক্রিকেটার জীবনে কখনও পাঁচদিনের ম্যাচ খেলেননি। কোনদিন পাঁচদিনের ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ছাড়াই অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা। শচিন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়, সৌরভ গাঙ্গুলির মতো বিশ্বমানের ব্যাটসম্যানের সামনে প্রথম টেস্টে বল করা মোটেই সহজ কাজ ছিল না।
এছাড়া জাভাগাল শ্রীনাথ, জহির খান, অজিত আগারকার, সুনিল যোশী ও মুরালি কার্তিকে সাজানো বোলিং আক্রমণ সামলানোও ছিল কঠিন। কিন্তু অবাক করা সত্য এই যে অভিষেক টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান ও বোলাররা দুটি কাজই করে দেখিয়েছিলেন। ব্যাটসম্যানরা রানও করেছেন, বোলাররা উইকেটেরও পতন ঘটিয়ে ভারতকে অলআউট করার কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন।
আমিনুল ইসলামের ১৪৫ রানের ইনিংস ইতিহাস হয়ে আছে। হাবিবুল বাশারের সাবলীল ৭১ রানও চোখে ভাসে। আকরাম খান, খালেদ মাসুদ পাইলট, হাসিবুল হোসেন শান্ত আর মোহাম্মদ রফিকরা মিলে প্রায় দুই দিন (১৫৩.৩ ওভার) ক্রিজে থেকে ৪০০ রানের বড় স্কোর গড়েন।
পরে বল হাতে কারিশমা দেখিয়ে ৬ উইকেট শিকার করে সাড়া জাগান নাইমুর রহমান দুর্জয়। প্রথম ম্যাচের অধিনায়ক অফস্পিনার দুর্জয়ের ৬ উইকেট শিকারের কথা সে তুলনায় উচ্চারিত হয় কম। তবে পরশু (রোববার) তামিম ইকবালের ফেসবুক লাইভে জাতীয় দলের তিন সাবেক অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়, খালেদ মাহমুদ সুজন ও হাবিবুল বাশার সুমনের কথোপকথনে ফিরে এসেছিল ঐ অভিষেক টেস্টের স্মৃতি।
সেই ম্যাচে ৬ উইকট শিকারের পথে শচিন টেন্ডুলকার আর সৌরভ গাঙ্গুলির মত ব্যাটসম্যানদের আউট করেছিলেন দুর্জয়, সে কথাও উঠল। সে বোলিং সাফল্যের প্রসঙ্গ আসতে দুর্জয় বলেন, ‘বুলবুল ভাইয়ের সেঞ্চুরি, সুমনের ফিফটি আর আকরাম ভাই মিলে আমরা ৪০০ করেছিলাম। প্রায় পৌনে দুদিন সময় পার হয়েছিল। তাতে করে ওদের বোলারদের ফুটমার্কস থেকেও স্পিনারদের খানিক সহায়তা মিলছিল। একপ্রান্তে রফিক ছিল খুব টাইডি বোলার। আর আমি প্রথম দিকে উইকেট পেয়ে শুধু ফ্ল্যাট বল না করে একটু ফ্লাইটে বৈচিত্র আনার চেষ্টা করেছিলাম।’
‘এমনিতে আমাদের টার্গেট ছিল রান যতটা সম্ভব আটকে রাখার। ভারতীয়দের বেঁধে রাখার সেই কাজটি খুব ভালভাবে করছিল রফিক। তখন আমি অন্য প্রান্ত থেকে চেষ্টা করি কিছু বৈচিত্র আনতে। অ্যাটাক করে কিছু উইকেটের পতনও ঘটিয়েছিলাম। প্রথম টেস্টেই শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে অ্যাটাক করে উইকেট নেয়া, সেটা ছিল অনেক বড় ব্যাপার।’
কী করে তা সম্ভব হয়েছিল? দুর্জয় ও সুজনের মত সেটা সম্ভব হয়েছিল মূলত গেম সেন্সের কারণে। দুর্জয়ের ব্যাখ্যা, ‘আমি আমার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বল করেছি। কখনও একটু একটু টেনে। কোনসময় বাড়তি ফ্লাইট দিয়ে। আর তাতেই সাফল্য পেয়েছি।’