শুক্রবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৪
Menu
Menu

অলৌকিক ঘটনা! ছয় ঘণ্টা বরফের মধ্যে অজ্ঞান হয়েও বেঁচে গেলেন নারী

Facebook
Twitter

ফিচার ডেস্ক।।

ইউরোপের দেশগুলোতে শীতের সময় প্রচুর তুষারপাত হয়। দুধ সাদা শুভ্র এই তুষার দেখতে লাগে ছবির মতো। তবে তীব্র তুষারপাত জনজীবনকে কিছুটা ব্যাহত করে বটে! রীতিমতো প্রাণটা হাতে নিয়েই চলতে হয় তুষারে ঢাকা রাস্তায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন না থাকলে অনেক সময় দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান অনেকেই। তবে এর মধ্যে দিয়েই লড়াই করে বেঁচে থাকার কাহিনী আছে অসংখ্য। তেমনই এক নারীর কথাই জানাবো। যিনি অসম্ভব প্রাণশক্তি নিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন এর থেকে।

ঘটনাটি ঘটে ১৯৮০ সালের ২০ ডিসেম্বর। প্রচুর তুষার পাত হচ্ছিল বাইরে। সেসময় তাপমাত্রা ছিল হিমাংকের নিচে ২২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রড। বিশেষ প্রয়োজনে বেরিয়ে ছিলেন ১৯ বছর বয়সী জিন হিলিয়ার্ড। তুষারপূর্ণ রাস্তায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িসহ একটি খাদের মধ্যে পড়ে যান তিনি। ভাগ্যক্রমে জিন শরীরে কোনো আঘাত পাননি। ঘটনা স্থল থেকে প্রায় দুই মাইল দূরে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার লেংবেই শহর। সেখানে ওয়ালি নেলসন নামে জিনের এক বন্ধু থাকত। কোনো উপায় না দেখে জিন তার বন্ধুর বাড়ির দিকে হাঁটতে শুরু করে।

সে রাতের আবহাওয়া ছিল চরম বৈরী। এমন বৈরী আবহাওয়ায় দুই মাইল পথ হেঁটে যাওয়া তার জন্য খুবই কষ্ট সাধ্য ছিল। জিনের পায়ে কাউবয় বুট থাকায় হাঁটতে কিছুটা সুবিধা হয়। ঘণ্টাখানিক হাঁটার পর বন্ধুর বাড়ির কাছে পৌঁছায় জিন। তবে তাদের ডাকার আগেই জিন ঠাণ্ডায় এবং ক্লান্তির জন্য অজ্ঞান হয়ে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছিল রাত ১ টার সময়। এই গভীর রাতে তাকে সাহায্য করার মতো কেউ ছিল না।

বরফের মধ্যে জিন হিলিয়ার্ড প্রায় ছয় ঘণ্টা অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। পর দিন সকাল সাতটায় ওয়ালি নেলসন তার বাড়ি থেকে বের হন। আর তখনই বরফের মধ্যে জিনের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। ওয়ালি তার জিনের শরীর পরীক্ষা করে দেখেন। জিনের মুখ সহ শরীরের বেশিরভাগ অংশ বরফে জমে গিয়েছিল। ওয়ালি ভেবেই নেন জিন মারা গিয়েছে। তারপরও বন্ধুকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা করেন তিনি। পার্শ্ববর্তী এক হাসপাতালে নিয়ে যান জিনকে। চিকিৎসকরা প্রথমে দেখে জিনের বাঁচার আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিল। তীব্র শীতের কারণে তার মস্তিষ্কের বেশ ক্ষতি হয়েছে। বরফে ত্বকও জমে শক্ত হয়ে গিয়েছিল।

জিনের ত্বক এতটাই শক্ত ছিল যে শরীরে ইনজেকশন দেয়াও সম্ভব হচ্ছিল না। তখন জিনের শরীরের তাপ মাত্রাও অনেক কম। জিনকে উষ্ণ রাখতে বৈদ্যুতিক কম্বল জড়ানো হয়। এমন শারীরিক অবস্থা থেকে বাঁচার আশা চিকিৎসকরা প্রায় ছেড়েই দেন। তবে হিলিয়ার্ডের পরিবার হয়তো অলৌকিক কিছুর আশাই করে যাচ্ছিলেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন জিন হিলিয়ার্ডের মা। তিনি জিনের হাতে হাত রেখে নাম ধরে ডাকতে থাকেন। এর কিছুক্ষণ পর জিনের জ্ঞান ফিরে আসে। পানি খেতে চায় জিন। চিকিৎসকরাও হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। দিন শেষে সে হাত নাড়াতে পারছিল। তিন দিন পর পা নাড়াতে সক্ষম হয় জিন। ৪৯ দিনের চিকিৎসায় সে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠে।

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার লেংবে শহরে ঘটেছিল এমন এক অলৌকিক ঘটনা। জিন হিলিয়ার্ড বরফে জমে যাওয়ার পরও অলৌকিকভাবে বেঁচে গিয়েছিলন। তাকে চিকিৎসা দেয়া চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাও এ ঘটনায় হতবাক হয়েছিলেন। একজন চিকিৎসক তার শরীরের উন্নতি দেখে চিকিৎসার ইতিহাসে একটি অলৌকিক ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করেন।সূত্র-মিস্টিরিয়াসফ্যাক্টস।

জনপ্রিয়