আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) এখনো পর্যন্ত কোনো সফল ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। তাই রোগীদের শরীরে অ্যান্টিবডিই এখন বেঁচে থাকার ভরসা। তবে নতুন গবেষণা বলছে, কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা রোগীদের শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা দ্রুত কমতে থাকে। আক্রান্ত হওয়ার দু-তিন মাসের মধ্যে কমতে থাকে অ্যান্টিবডি।
উপসর্গ ও উপসর্গবিহীন কোভিড-১৯ রোগীদের শরীরে গবেষণা চালিয়ে এমন তথ্য পেয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা। এতে নভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতার স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। গত ১৮ জুন নেচার মেডিসিন জার্নালে গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশ পেয়েছে।
এর আগে গবেষকরা বলেছিলেন, যাদের শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি পাওয়া যাবে তাদের বাইরে চলাফেরা করতে সমস্যা নেই। তাই বর্তমানে কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা মানুষের প্লাজমা অ্যান্টিবডি দিয়ে অন্য কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা চলছে। ঠিক এই মুহূর্তে কোভিড-১৯ রোগীদের অ্যান্টিবডি নিয়ে এমন তথ্য দিলেন গবেষকরা।
উপসর্গ দেখা দিয়েছে এমন ৩৭ জন ও উপসর্গ দেখা দেয়নি এমন ৩৭ জন মোট ৭৪ জন করোনা রোগীর রক্তের অ্যান্টিবডির ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, যেসব রোগীরা আইজিজি অ্যান্টিবডির (এক ধরনের অ্যান্টিবডি যা সংক্রমণের পরে তৈরি হয়) উপস্থিতিতে কোভিড শনাক্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে শতকরা ৯০ শতাশ রোগীর শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা দু-তিন মাসের মধ্যে মারাত্মকভাবে কমে গেছে।
৭০ শতাংশ রোগীর অ্যান্টিবডি অর্ধেকে নেমে এসেছে। যাদের মধ্যে করোনার উপসর্গ ছিল তাদের মধ্যে ১১ দশমিক ৭ শতাংশ আর যাদের উপসর্গ দেখা দেয়নি তাদের মধ্যে ৮ দশমিক ৩ শতাংশের অ্যান্টিবডি নেমে এসেছে অর্ধেকে।
গবেষণাটি চালিয়েছে চীনের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন ইনস্টিটিউটের শাখা চংকুইং মেডিকেল ইউনিভার্সিটি।
তবে গবেষণায় অ্যান্টিবডি নিয়ে এমন তথ্য এলেও হাল ছাড়েননি ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়ের ভাইরোলজি বিভাগের অধ্যাপক জিন ডং-ইয়ান (তিনি এই গবেষণায় অংশ নেননি)। তিনি বলেছেন, গবেষণায় আইজিজি অ্যান্টিবডির মাত্রা কমে যাওয়ার কথা বলা হলেও শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতার অন্যান্য অংশকে অস্বীকার করেনি।
তিনি বলছেন, যখন কেউ প্রথম সংক্রমিত হন তখন কিছু সেল এই ভাইরাসের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার জন্য তৎপর হয়ে ওঠে এবং পরবর্তীতে তিনি দ্বিতীয় দফায় সংক্রমিত হলেও কার্যকরী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে এই সেলগুলো।
তবে করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রেও এমনটি হচ্ছে কি-না, তা নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
এই অধ্যাপক বলেন, এই গবেষণার মানে এই নয় যে, মাথার ওপর আকাশ ভেঙে পড়ছে। কারণ খুব কম সংখ্যক রোগীর ওপর গবেষণা চালিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। সূত্র-রয়টার্স।