আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
হ্যান্ডশেক বা করমর্দন এক সময় স্বাভাবিক একটি বিষয় হলেও করোনা ভাইরাসের কারণে এখন এটি মানুষ করতে চাচ্ছে না। হাজার হাজার বছরের এই রীতিকে মানুষ বাদ দিতে বসেছে। অথচ কাউকে আন্তরিকতার সঙ্গে সম্ভাষণ জানানোর এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। কিন্তু বর্তমান বৈশ্বিক সংকটের কারণে করমর্দনের এই রীতি উঠে যাচ্ছেই বলে মনে করা হচ্ছে।
গোটা বিশ্বে বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বে পরস্পরকে সম্ভাষণ জানানোর জন্য এই রীতিকে ব্যবহার করা হয়। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কিংবা দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। করোনার এই সংকটকালে মানুষ ভাবছেন, এর পরিবর্তে বিকল্প কি পদ্ধতি হতে পারে। এ নিয়ে অনেকে অনেক ধরনের প্রস্তাব দিয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন, হাতের পরিবর্তে কনুই দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো যেতে পারে। কিন্তু এটিও কতটা ঝুঁকিমুক্ত তা নিয়েও অনেক সংশয় রয়েছে। এই অবস্থায় অনেকেই ভাবছেন, হ্যান্ডশেকের কি ইতি ঘটতে চলেছে নাকি করোনা শেষ হয়ে গেলে মানুষ আবার আগের মতো পারষ্পারিক শুভেচ্ছা বিনিময়ে চলে যাবেন। এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক যা-ই থাকুক না কেন একটু পেছন ফিরে দেখা যাক এই হ্যান্ডশেকের উত্পত্তি কোথা থেকে। একটি ধারণা প্রচলিত রয়েছে এর উত্পত্তি প্রাচীন গ্রিসে। দুজন মানুষের মধ্যে শান্তির প্রতীক হিসেবে এটি ব্যবহূত হয়। কারণ হ্যান্ডশেকের সময় দেখানো যায় যে কারো হাতে কোনো অস্ত্র নেই।
আরেকটি ধারণা হলো হ্যান্ডশেকের রীতি চালু হয়েছে মধ্যযুগীয় ইউরোপে। সামরিক পদমর্যাদার নাইটরা একে অপরের হাত ধরে নাড়তে থাকতেন যাতে কেউ অস্ত্র লুকিয়ে রাখতে না পারে। এর পর থেকে ধীরে ধীরে নানা কারণে এই করমর্দন জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী ক্রিস্টিন লিগার বলেছেন, মানুষের সঙ্গে মানুষের সংযোগের একটি শারীরিক ভাষা এই হ্যান্ডশেক এবং মানুষ কীভাবে ক্রমশ সামাজিক ও স্পর্শপ্রবণ প্রাণী হয়ে উঠেছে তারই প্রতীক এটি। তিনি আরো বলেছেন, স্পর্শের গুরুত্ব বোঝাতে এর বিকল্প হিসেবে আমরা কনুই দিয়ে আরেকজনের কনুইতে টোকা দিচ্ছি। কারণ আমরা শারীরিক সংযোগের এই প্রথাকে হারাতে চাই না। -বিবিসি