রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪
Menu
Menu

কে-লিগ শুরু শুক্রবার, বিশ্বকে দক্ষিণ কোরিয়ার আরেক বার্তা

Facebook
Twitter

স্পোর্টস ডেস্ক।।

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দক্ষিণ কোরিয়া সারাবিশ্বের কাছেই দারুণ এক অনুপ্রেরণার নাম। ৮ মে, শুক্রবার দেশটি তাদের পেশাদার ফুটবল লিগ কে-লিগ শুরু করে বিশ্বকে আরেকটি বার্তা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।

কে-লিগ ২০২০ শুরু হওয়ার কথা ছিল ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে। আর ওইদিনই দক্ষিণ কোরিয়ায় রেকর্ড ৯০৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়। কে-লিগ স্থগিত হয়ে যায় কয়দিন আগেই। আবার কবে তা শুরু হবে কারও পক্ষেই বলার উপায় ছিল না। তবে দেশটিতে গত এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকেই সংক্রমণের হার এক অঙ্কে নেমে এসেছে। ৪ মে সংক্রমণ ছিল শূন্য। পরিস্থিতি অনেকটা নিরাপদ মনে হওয়ায় শুরু হচ্ছে ১২ দলের কে-লিগ। আপাতত অবশ্যই দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে, তবে পরিস্থিতির ক্রমোন্নতি সাপেক্ষে দর্শক উপস্থিতির ব্যাপারটাও ভাবা হবে।

এশিয়ার মধ্যে তাইওয়ান ও তুর্কমেনিস্তানে এখনও ফুটবল চলছে, কিন্তু সে নিয়ে খুব বেশি কথা হয় না। কে-লিগ নিয়ে হচ্ছে, কারণ এটির মান অনেক উঁচু। এত বেশি এশীয় চ্যাম্পিয়ন ফুটবলার যে এশিয়ার অন্য কোনও দেশ তৈরি করতে পারে না। কে-লিগ তার ৩৭ বছরের ইতিহাসে এত বেশি আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে কখনও ছিল না। ঘরোয়া ফুটবলের নতুন সম্প্রচার-স্বত্বের খোঁজে বছরটা শুরুই হয়েছিল হতাশা নিয়ে, কিন্তু এখন সারাবিশ্বের নানা মিডিয়া কোম্পানি লিগের সদর দপ্তর সিউলের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। খেলার জগতে সরাসরি সম্প্রচারযোগ্য খেলার যে বড্ড আকাল। মানুষ টিভি পর্দায় সরাসরি খেলা দেখার জন্য ঘরে রয়েছে তৃষ্ণার্ত অপেক্ষায়। কে-লিগ ৫ মের মধ্যেই চীন থেকে শুরু করে ক্রোয়েশিয়াসহ নানা দেশের সঙ্গে ১০টি আন্তর্জাতিক চুক্তি করে ফেলেছে। দৈনিক কোরিয়া হেরাল্ডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আরও অনেকের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে।

কে-লিগের সভাপতি কাওয়ান ওহ্-গাপ বলেছেন, ‘এই দিনগুলোতে লাইভ ফুটবল খুব বিরল। এশিয়ার শীর্ষ লিগটিকে সারাবিশ্বের কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার একটি বড় সুযোগ এটি। আমাদের আশা, কে-লিগ যখন শুরু হবে ফুটবল-ভক্তরা ভাইরাসের কথা ভুলে যাবে।’

গত তিনবারের চ্যাম্পিয়ন জেওনবুক মোটরস শুক্রবার সন্ধ্যায় জেজু বিশ্বকাপ স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে কাপ চ্যাম্পিয়ন সুওন ব্লুউইংসের। জোসে মরিনিয়োর সাবেক সহকারি জোসে মোরাইসের তত্ত্বাবধানে এবার রেকর্ড চতুর্থ শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে নামছে জেওনবুক।

‘লিগ শুরু করার প্রক্রিয়ায় আমরা স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞদের মতামত নিই। তাদের সাধারণ মত এই ছিল যে, কমপক্ষে দুই সপ্তাহের জন্য নিশ্চিত কোভিড-১৯ রোগী যখন ৩০-এর নিচে নেমে আসবে তখন লিগ শুরু করা যেতে পারে’-বলেছেন কাওয়ান। সেই ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত অপেক্ষায় থেকে লিগ শুরু করার জন কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি কে-লিগকে। লিগের খেলোয়াড় ও স্টাফ মিলিয়ে ১১০০ জনেরই করোনা-পরীক্ষা হয়েছে গত সপ্তাহে। সবগুলো রিপোর্টই এসেছে নেগেটিভ।

তবে কে-লিগ প্রধান জানিয়েছেন, তারা আত্মতুষ্টিতে ভুগছেন না। লিগের খেলা ৩৮ থেকে ২৭টিতে নামিয়ে আনা হয়েছে। প্রতিটি দলের ২২টি করে ম্যাচ শেষ হতে পারলেই লিগ শেষ বলা যাবে। ‘ভাইরাসটি শান্ত হয়েছে ঠিকই কিন্তু একেবারেই যায়নি। মৌসুম চলার সময়েই যদি কোনও দলের মধ্যে আবার ভাইরাসের অস্তিত্ব ধরা পড়ে, তাহলে তাদের ও তাদের প্রতিপক্ষ যাদের সঙ্গে তারা সর্বশেষ খেলেছে, দুই দলেরই ম্যাচগুলো দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত থাকবে’-বলেছেন কাওয়ান।

কঠিন স্বাস্থ্য-বিধি মেনেই খেলা চলবে। ম্যাচের পরে সব সাক্ষাৎকারই নিতে হবে মাঠের মধ্যে। সাংবাদিকদের ২ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কেউ করমর্দন করতে পারবে না। মাঠের মধ্যে খেলোয়াড়দের বারবার থুতু ফেলা বা নাক-ঝাড়া নিষিদ্ধ। খুব কাছাকাছি এসে খেলোয়াড়েরা কথাও বলতে পারবে না। প্রতিটি খেলোয়াড়ের জন্য পানির বোতল মাঠের পাশে রাখা থাকবে, বোতলে লেখা থাকবে যার যার নাম যাতে একজনেরটা আরেকজন না নেয়।

জনপ্রিয়