আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এখন পর্যন্ত ১০ জন মারা গেছে বলে জানিয়েছের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ঝড়ে পশ্চিমবঙ্গে চলা তাণ্ডবের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যা খবর পাচ্ছি, ১০-১২ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। বেশিরভাগই গাছ ভেঙে চাপা পড়ে মারা গিয়েছে।’
এদিকে পশ্চিমবঙ্গে মাটির ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে শিশুসহ মা মারা গেছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে। বিবিসি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ১৯৯৯ সালের পর বঙ্গোপসাগরের তৈরি হওয়া প্রথম ‘সুপার সাইক্লোন’ এই আম্ফান। ঘণ্টায় ১৩৩ থেকে ১৩৫ কিলোমিটার বেগে তাণ্ডব চালানো এই ঝড়ের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে সিডরের যার প্রভাবে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়। অবশ্য এই মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয় জলোচ্ছ্বাসকে। সিডরের তাণ্ডবে ধ্বংস হয় বাংলাদেশের সুন্দরবনের এক-তৃতীয়াংশ। ২০০৭ সালের প্রলয়ঙ্করী এই ঝড়ের পাশাপাশি আম্ফানের তুলনা করা হচ্ছে আইলার সঙ্গে। আইলায় ঝড়ের প্রভাব সরাসরি বাংলাদেশ অনুভব না করলেও জোয়ারের সময় পানির চাপে বাঁধা ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয় দেশের সাতক্ষীরা জেলায়। লোনা পানি প্রবেশ করায় আইলা পরবর্তী ৫ বছর সাতক্ষীরার প্রান্তিক অঞ্চলগুলোতে ধানের জমি লবণাক্ত হয়ে ফলনের পরিমাণে তিনভাগের একভাগে নেমে আসে।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হচ্ছিল। ধারণা করা হচ্ছিলো ১০ ফুটের বেশি উচ্চতার ঢেউগুলো আছড়ে পড়বে উপকূলে। যার প্রভাবে আবারো দুর্বল বাধ ভেঙ্গে উপকূলীয় অঞ্চলে পানি প্রবেশ করবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কোন খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে বড় কোন ক্ষয়-ক্ষতির খবর পাওয়া না গেলেও পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা-সহ চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, হুগলী এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের কিয়দংশ লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে আম্ফান। কাঁচাবাড়ি, বিদ্যুতের খুঁটি ও গাছ ভেঙে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকা বাড়ি, সেতু ও রাস্তার।
মহামারী করোনা আতঙ্কের মধ্যে আম্ফান এক নতুন আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে। এর প্রভাবে ভারতের কলকাতায় বৃহস্পতিবার সারাদিন বৃষ্টি হইতে পারে বলে জানায় দেশটির আবহাওয়া বিভাগ।