বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪
Menu
Menu

ঘূর্নিঝড় আমফান: বরগুনায় আশ্রয় কেন্দ্রগুলো জনশূণ্য, আশ্রয়প্রার্থীদের অপেক্ষায় সেচ্ছাসেবীরা

Facebook
Twitter

গোলাম কিবরিয়া,বরগুনা।।
দু’দিন ধরে বরগুনার প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের ঘুম নেই। নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে জেলার প্রায় সাত হাজার স্বেচ্ছাসেবী। তাদের অনুরোধ শুধু একটাই ঝড় শুরুর আগেই নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার! গত দুদিনের প্রচেষ্টায় তাদের এই ছোট্ট অনুরোধটি পৌঁছে গেছে বরগুনার সকল ঘরে ঘরে। উপকূলজুড়ে এখন ৭ নম্বর বিপদ সংকেত। বরগুনার আকাশে কালো মেঘ, সঙ্গে বইছে দমকা হাওয়া। সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষায় বরগুনা সদর উপজেলার পশ্চিম গোলবুনিয়া শিশু-কিশোর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রটি খুলে বসে আছেন সহকারী শিক্ষক মো. জাকির হোসেন। সকাল থেকে আশ্রয় কেন্দ্রটি খুলে বসে থাকলেও আশ্রয় নিতে আসেনি কেউ। কেউ নিয়ে আসেননি গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্রও।

পশ্চিম গোলবুনিয়া শিশু-কিশোর সরকারি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, গত দু’দিন ধরে প্রশাসনের নির্দেশে এভাবেই স্কুল খুলে আমাদের বসে থাকতে হচ্ছে আশ্রয় প্রার্থীদের অপেক্ষায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এখানে কেউ আশ্রয় নিতে আসেনি।

আমফানের প্রভাবে প্রাণহানী রোধে বরগুনা জেলায় ৬১০টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করেছে জেলা প্রশাসন। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ব্যবস্থা করা হয়েছে ইফতারসহ রাতের খাবার এবং সাহরির। ইতোমধ্যে খুলে দেয়া হয়েছে বরগুনা জেলার সকল আশ্রয় কেন্দ্র।

বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় আমফানের বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে গত দু’দিন ধরে জেলাজুড়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছে প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কর্মী। ইতোমধ্যেই সাধারণ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে নির্দেশনা দিয়েছে বরগুনা জেলা প্রশাসন। কিন্তু কিছুতেই টনক নড়ছে না বরগুনার সাধারণ মানুষের।

সরেজমিনে বরগুনা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, পোটকাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং গোলবুনিয়া শিশু-কিশোর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, আশয় কেন্দ্র তিনটি একেবারে ফাঁকা পড়ে আছে। ফাঁকা কেন্দ্রগুলোতে পাহারার দায়িত্বে আছেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক ওবং কর্মচারীরা।

পোটকাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মচারী মো. রুহুল আমিন বলেন, প্রশাসনের নির্দেশে গত দুদিন ধরে আমরা স্কুল খুলে রেখে পাহারা দিচ্ছি। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত এখানে কোনো আশ্রয়প্রার্থী আসেননি।

বরগুনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট আশয় কেন্দ্রে দায়িত্বপালনরত একজন কর্মচারী জানান, আজ সকাল থেকে এ আশয় কেন্দ্রটি খুলে বসে আছেন। ইতোমধ্যে আশয় কেন্দ্রটি বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু রাত হলেও এখন পর্যন্ত এই আশ্রয় কেন্দ্রে কেউ আশ্রয় নিতে আসেনি।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ঘূর্ণিঝড় আমফান মোকাবেলায় গত তিন-চারদিন ধরে আমরা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে আমাদের প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যেই আমরা সাধারণ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছি।

সন্ধ্যার আগেই আমরা সাধারণ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলেছি। আমাদের এই নির্দেশনা উপেক্ষা করে যারা নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে যাবে না, তাদের খুঁজে বের করে ধরে ধরে আশয় কেন্দ্রে নেয়া হবে।

জনপ্রিয়