অনলাইন ডেস্ক।।
উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের বিনসাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে মিতুয়ারা খাতুন (১৮)। সে জন্মগতভাবে বাক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধি। মিতুয়ারার একটি প্রতিবন্ধি ভাতা কার্ডের জন্য তার মা মমতাজ বেগম দিনের পর দিন বিনসাড়া ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইলিয়াস আলী ভূঁইয়ার নিকট দিনের পর দিন ঘুরতে থাকেন। অবশেষে ১ বছরের ভাতার টাকা ওই ইউপি সদস্যকে দেওয়ার শর্তে তার ভাতা কার্ডের ব্যবস্থা হয়।
মিতুয়ারার মা মমতাজ বেগম বলেন, প্রথম ১ বছরের ৭ হাজার ২শ টাকার পুরোটাই ইউপি সদস্য ইলিয়াস আলী ভূঁইয়া নিয়ে নেন। একই গ্রামের শফিজ মোল্লার স্ত্রী জাহেরা খাতুন (৪৮)। দুর্ঘটনার শিকার হয়ে তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে একদম শয্যাশায়ী। বিছানা ছেড়ে একা কোথাও নড়াচড়া করতে পারেন না। প্রতিবন্ধি ভাতা কার্ড দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে ৬ হাজার টাকা।
শফিজ মোল্লা বলেন, তিনি মাঠের মধ্যে দিন মজুরের কাজ করছিলেন। ইউপি সদস্য ইলিয়াস আলী ভূঁইয়া তাকে ডেকে পাঠান। এরপর তার স্ত্রীর প্রতিবন্ধি ভাতা কার্ড দেওয়ার কথা বলে ৬ হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি ঋণ করে ৬ হাজার টাকাই দেন। যদিও ৪/৫ মাস পেরিয়ে গেলেও তার স্ত্রীর এখনও ভাতা কার্ড হয়নি। ওই গ্রামেরই তইওব আলী মন্ডলের (৬৮) ছেলে ইউনুছ আলী তার বাবার বয়স্ক ভাতা কার্ডের জন্য ইউপি সদস্য ইলিয়াস আলী ভূঁইয়াকে ৪ হাজার টাকা দিয়েছেন।
ইউনুছ আলী বলেন, প্রায় বছর খানেক ঘুরেও তার বাবার জন্য বয়স্ক ভাতা কার্ডের ব্যবস্থা হচ্ছিল না। পরে ৪ হাজার টাকা দিলে তাকে ভাতাকার্ড করে দেওয়া হয়। বিনসাড়া গ্রামেরই মৃত হযরত আলী মোল্লার স্ত্রী রোমেলা খাতুন (৪৫) একটি বিধবা ভাতা কার্ডের জন্য ইউপি সদস্য ইলিয়াস আলী ভূঁইয়াকে ৪ হাজার টাকা দিয়ে রেখেছেন। তবে তার ভাতা কার্ড এখনও হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও ৬জন বলেন, তাদের থেকেও ৪/৫ হাজার করে টাকা নিয়ে ভাতা কার্ড করে দিয়েছেন ইউপি সদস্য ইলিয়াস আলী ভূঁইয়া।
বারুহাস ইউনিয়নের ৭নং বিনসাড়া ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইলিয়াস আলী ভূইয়া বলেন, বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধি ভাতা কার্ড করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে টাকা দিতে হয়। সে জন্যই খরচ বাবদ ভাতাভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। বারুহাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোক্তার হোসেন মুক্তা বলেন, কার্ড দেওয়ার বিষয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া বেআইনি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধিদের ভাতা কার্ড দিতে কোন জনপ্রতিনিধি অর্থ নিতে পারবেন না। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূএ-ইত্তেফাক।