আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
লকডাউনে ঘরে খাবার নেই। রাস্তার পাশে রোজ খাবার দিতে যেতেন ছেলেটি। সেই অসহায় মুখগুলোর ভিড়েই হঠাৎ একটি মুখ খুব চেনা হয়ে উঠল। খাবারের আশায় হাত বাড়িয়ে অপেক্ষা করতো মেয়েটি। ত্রাণ দিতে গিয়েই ওই মেয়েটির আলাপ হল সঙ্গে ছেলেটির। বন্ধুত্বের পর প্রেমও হয়। শেষ পর্যন্ত সেই প্রেমই সাত পাকে বাঁধল ওদের। ভারতের কানপুরে এ ঘটনা ঘটেছে।
ছেলেটির নাম অনিল। পেশায় গাড়িচালক। আর ওই মেয়েটি নীলাম।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্র জানা গেছে, নীলামের বাবা মারা গিয়েছে বছর খানেক আগে। ভাই-ভাবি খুব করে পেটাত তাকে। এক রাতে বাড়ি থেকেই বের করে দিল নীলাম আর ওর মা’কে। মা এদিকে প্যারালাইসড। ওদের দু’জনের মাথা গোঁজার ঠাঁই হল না। খোলা রাস্তার পাশেই কোনও মতে দিন গুজরান হয়ে যেত। সমুত্ত মেয়ে। দিনকালও ভাল নয়! তবুও কোনও মতে খাবারটা এদিক-ওদিক করে রাস্তার দোকানে কাজ করে জুটে যাচ্ছিল। কিন্তু লকডাউনে চরম বিপদে পড়ল মা-মেয়ে। ভিক্ষে করা ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই। অগত্যা কানপুরের কাকাদেওয়ের নীর-শীর ক্রসিংই ঠাঁই হল ওদের! এভাবেই আলাপ হল অনিলের সঙ্গে নীলামের। সে রোজ খাবার দিতে যেত দুস্থদের। নীলামকে দেখে ভাল লেগে যায়। পরের দিকে নিজে হাতে রেঁধে মা-মেয়ের জন্য খাবার নিয়ে যেত অনিল। ব্যাস! বিয়ের প্রস্তাব দিয়েই বসল অনিল।
সম্প্রতি কানপুরের লর্ড বুদ্ধা আশ্রমে নীলম-অনিলের চার হাত এক হয়েছে। লকডাউনের নিয়ম মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই বিয়ে হল। অনিলের বন্ধু লাল্টা প্রসাদ, যিনি নিজেও খাবার দিতে যেতেন, তিনিই রাজি করালেন বন্ধুর বাবাকে এই বিয়ের জন্য মত দিতে। বিগত দু’মাসের এই লকডাউন যে মানুষকে শুধু তিক্ততার স্বাদই দেয়নি, বরং কারও কারও ভাঙা সম্পর্কও জোড়া লাগিয়েছে, কিংবা নতুন করে সম্পর্কও গড়ে তুলেছে, নীলাম আর অনিলই বোধহয় তার জ্বলন্ত উদাহরণ।