স্পোর্টস ডেস্ক।।
এই তো গত গ্রীষ্মেই তারা বিশ্বকাপ জিতেছে। সব মিলিয়ে চারবার। অলিম্পিক ফুটবলের সোনা জিতেছে পাঁচবার। যুক্তরাষ্ট্রের মেয়েদের ফুটবল দলের এই আলোকিত সাফল্যের কাছে পুরুষ দল একেবারেই ম্লান। কোনও বৈশ্বিক শিরোপাই জিততে পারেনি পুরুষ দল। বিশ্বকাপে তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য তৃতীয় স্থান পাওয়া, সেও গত শতাব্দীতে, ১৯৩০ প্রথম বিশ্বকাপে। কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে ১৮ বছর আগে, ২০০২ জাপান-কোরিয়া বিশ্বকাপে।
আন্তর্জাতিক সাফল্যে আকাশ-পাতাল ব্যবধান সত্ত্বেও পুরুষ ফুটবলাররা মেয়েদের তুলনায় বেশি বেতন পায়। এই বৈষম্যই বহুদিন ধরে তুষের আগুনের মতো জ্বলেছে মেয়েদের মনে। অবশেষে জাতীয় নারী দলের ২৮ জন ফুটবলার সমবেতনের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্র সকার ফেডারেশনের (ইউএসএসএফ) বিরুদ্ধে আদালতে মামলা ঠুকে দেন। সমবেতন আইনের অধীন তারা ৬.৬ কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণও দাবি করেন।
কিন্তু আদালত নারী ফুটবলারদের এই মামলা গত শুক্রবার খারিজ করে দিয়েছেন। বিচারক মানেননি যে পুরুষদের তুলনায় নারী ফুটবলাররা কম বেতন পান। ‘হতাশ’ ও ‘মর্মাহত’ নারী ফুটবলারদের মুখপাত্র মলি লেভিনসন এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন। ‘সমবেতন আদায়ের আন্দোলন থেকে আমরা সরবো না। আমরা আমাদের দাবির ব্যাপারে অটল ও আত্মবিশ্বাসী। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে শুধু লিঙ্গ বিবেচনায় এই খেলায় মেয়েরা কম মূল্যমানের বিবেচিত হতে পারে না।’
ফেডারেল জাজ গ্যারি ক্লুজনার নারী ফুটবলারদের দাবি করা ভ্রমণ, আবাসন ও চিকিৎসা ভাতায় বৈষম্যের বিষয়টা বিচারাধীন রেখেছেন, লস অ্যাঞ্জেলসে সেটির শুনানি হবে ১৬ জুন। আদালত আদেশে বলেছেন, ‘নারীদের দল সার্বিকভাবে এবং ম্যাচ প্রতি গড়ে নিয়মিতভাবেই বেশি পেয়ে আসছে।’
এই রায়ের গত মহিলা বিশ্বকাপ জয়ী দলের স্ট্রাইকার, গোল্ডেন বল ও গোল্ডেন শু জেতা মেগান র্যাপিনো টুইট করেছেন, ‘সমান অধিকার অর্জনের লড়াই থেকে আমরা পিছু হটবো না।’ ইউএসএফ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইউএস ফুটবল বহু বছর ধরেই মেয়েদের খেলাটিতে মাঠ ও মাঠের বাইরে নেতৃত্ব দিচ্ছে বিশ্বজুড়ে। আমরা এভাবেই আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে দায়বদ্ধ।’
যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল ফেডারেশন নিযুক্ত আইনজীবীরা গত বছর আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করেন যে মেয়েদের ফুটবলারদের চেয়ে ছেলেদের ফুটবলারদের গতি, শক্তি ও দক্ষতা বেশি; আর এজন্যই ছেলেদের পারিশ্রমিক বেশি। এর পর পরই ইউএসএসএফের সভাপতি কার্লোস কর্দেইরো পদত্যাগ করেন গত মার্চ মাসে।
মজার ব্যাপার হলো, যুক্তরাষ্ট্রের পুরুষ ফুটবলাররা নারী ফুটবলারদের সমবেতনের দাবি সমর্থন করেন প্রকাশ্যেই। তারা ইউএসএসএফের কড়া সমালোচনা করেছেন তাদের বিবৃতিতে, ‘ফেডারেশন মেয়েদের বেতন ও কর্মপরিবেশ নিয়ে বৈষম্য করেই চলেছে।’