শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ২০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০
এএসএম জসিম, পাথরঘাটা (বরগুনা)।।
বরগুনার পাথরঘাটা পৌরসভাটি ৩২ বছর পর প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত হলেও ভোগান্তির শেষ নেই পৌর এলাকার অর্ধ লক্ষ বাসিন্দের। ভাংগাচুরা সড়ক সংস্কারের পাশাপাশি দীর্ঘ বছরের দাবি পানি নিষ্কাশনের জন্য ডেনেজের ব্যাবস্থা করা। এ লক্ষ্যে গত বছর পৌর শহরের শেখ রাসেল স্কয়ারের উত্তর পাশ থেকে নুরিয়া লাইব্রেরীর পিছন পর্যন্ত ৭০ মিটার ড্রেনেজ নির্মাণের টেন্ডার দেয়া হয়। যা দীর্ঘদিন পর চলতি মাসে কাজ শুরু করেন ঠিকাদার তৃনাথ কর্মকার। আর এই ড্রেনেজের কাজের শুরুতেই অনিয়মের অভিযোগ উঠে ঠিকাদার কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ অনিয়ম অভিযোগ পেয়ে সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে ক্যামেরা বন্ধ করতে বলে বাধা প্রদান করেন ঠিকাদার কতৃপক্ষ। পরে পাথরঘাটা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মজিবুল হায়দারের কাছে কাজের সিডিউল চাইতে গেলে সাংবাদিকদের তা দিতে দিতে রাজি হননি।
সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাথরঘাটা পৌরসভার প্রান কেন্দ্র শেখ রাসেল স্কয়ারের উত্তর পাশ থেকে নুরিয়া লাইব্রেরীর পিছন পর্যন্ত ৭০ মিটার ড্রেনেজের কাজ শুরু করেন প্রায় এক মাস আগে। এর পর গত ২২ মে ড্রেনেজের ডালাইয়ের কাজ শুরু করেন। পরে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দুপুরের দিকে মিস্ত্রিরা ডালাইয়ের সাটার খুললে দেখা যায় ড্রেনেজের পুরো ডালাইয়ের মধ্যের পুরোটাই ফাকা এবং রড বের হয়ে আছে। সাটার খোলার সাথে সাথে অন্য এক রাজ মিস্ত্রী বালি সিমেন্টের মিশ্রন দিয়ে প্রলেপ দিয়ে সাথে সাথেই কাদা মাটি দিয়ে ভরাট দিয়ে দিচ্ছেন। তাদের এই কাজের মান নিয়ে কেউ প্রশ্ন করলেই তাকে অপমান করে তারিয়ে দেন সংশ্লিষ্টরা। এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
ঠিকাদার তৃনাথ কর্মকারের সাইড পরিচালক ডালিম মিয়ার কাছে কাজে মান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আমার মতোই করছি, আপনারা এখান থেকে চলে যান।
কাজের অনিয়মের বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় কাউন্সিলর মো. জহিরুল হক খান চিনু বলেন, সেন্টারিং এর সময় ভাইব্রেটর মেশিন দিয়ে কাজ করা উচিৎ ছিল। তা না কারার করনে এরকম হচ্ছে। যে মালামাল দেয়ার কথা নিয়ম অনুযায়ী সে রকমই দিয়েছে। সিমেন্ট-বালুর প্রলেপ দেয়ার সাথে সাথেই নরম অবস্থায় কাদা মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়ার নিয়ম আছে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা অনিয়ম হচ্ছে। আমি তা বন্ধ করে দিয়েছি।
তৃনাথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী তৃনাথ কর্মকার জানান, আমি নিয়ম অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি আমার কাজে কোন অনিয়ম হচ্ছে না। কাজ শুরু থেকে এ পর্যন্ত একবারও ঠিকাদার আসেনি এবং ড্রেনেজের ডালাইয়ের মধ্যে থেকে রড বের হয়ে আছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রড বের হয়ে আছে তা আমার জানা নেই এবং আমি কাজের কাছে না থাকলেও আমার লোকজন সার্বক্ষনিক দেখভাল করে আসছেন।
পাথরঘাটা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মজিবুল হায়দারের কাছে ড্রেনেজের বিষয়ে কাজের সিডিউল ও তথ্য আনতে গেলে তিনি কোন তথ্য দিবেন না বলে সাংবাদিকদের জানিয়ে দেন।
পাথরঘাটা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো. মশিউর রহমান জানান, আমরা সিডিউল অনুযায়ী কাজ করার পরামর্শ দিয়ে আসছি। কিন্তু ঠিকাদার এবং মিস্ত্রি তার খামখেয়ালি ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।