সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪
Menu
Menu

পা থেকেও হতে পারে করোনা সংক্রমণ

Facebook
Twitter

লাইফস্টাইল ডেস্ক।।

মুখে মাস্ক লাগিয়ে, চোখে চমশা পড়ে, হাতেও লাগিয়েছেন গ্লাভস। ছোট সাইজের একটা সেনিটাইজার পকেটেই রেখে দিয়েছেন, কিন্তু পা থেকেও তো হতে পারে সংক্রমণ, পায়ের ক্ষেত্রে ও বিশেষ নিয়ম মেনে চলতে হবে, হাতের ক্ষেত্রে বার বার সাবান দিয়ে ধোওয়া কিংবা স্যানিটাইজ করার মতো বিষয়গুলি থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই পায়ের যত্নে অবহেলা করা হয়।

বর্ষার এই সময়টায় পায়ে ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে। হতে পারে নানা রকম সমস্যা, একটু বৃষ্টি পড়লেই কাদা জল লেগে যায় পায়ে। অনেক সময়ই শুধু পানি দিয়ে পা ধুয়ে নেন অনেকে। করোনার আশঙ্কা থাকলেও বাইরে বেরতে হচ্ছে অনেককেই। কেউ বা বাড়িতে প্রবেশের সময় স্রেফ পা মুছে ঘরে ঢুকে পড়েন। সে ক্ষেত্রে পা থেকে কি সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে? করোনার কারণে বাইরে থেকে ঘরে আসার পরই স্যানিটাইজেশন, গরম জলে স্নান এগুলির উপর জোর দিচ্ছেন অনেকেই। তবুও পায়ের যত্নে খামতি থেকে যাচ্ছে না তো? মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস ও কল্লোল সেনগুপ্ত এবং ডার্মাোলজিস্ট অরিত্র সরকারের গণমাধ্যমকে জানান।

বাইরে থেকে যাঁরা আসছেন তাঁদের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতে বললেন চিকিৎসকরা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে পরিচ্ছন্ন থাকাটাই সবচেয়ে জরুরি। তাই পায়ের যত্নেও কোনও রকম অবহেলা নয়।

১. বাইরে থেকে এলে জুতো ঘরের ভিতর রাখা যাবে না। ঘরের বাইরে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে দিতে হবে, এমনই জানান মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বাবু।

২. বাইরে থেকে ঘরে প্রবেশের সময় প্রয়োজনে অন্য একটি প্লাস্টিকের জুতো পরে সোজাসুজি চলে যেতে হবে স্যানিটাইজেশনের জন্য।

২. চামড়ার জুতো এড়িয়ে চলাই ভাল। প্লাস্টিকের জুতো বা ওয়াশেবল জুতো পরলে সবথেকে ভাল। সহজেই ধুয়ে নেওয়া যাবে সেটি, এ কথা বলেন মেডিসিনের চিকিৎসক কল্লোল সেনগুপ্ত।

৩. জুতো বাইরে রেখে সাবান পানিতে তা ধুয়ে নিতেও বলেছেন তাঁরা।

৪. দরজায় পাশেই একটি জায়গায় সাবান পানি ও স্যানিটাইজার রেখে দিন। হাত স্যানিটাইজ করার পর সাবান পানিতে সেই জুতো স্যানিটাইজ করে প্রবেশ করতে হবে।

যে কোনও রকম সংক্রমণ এড়াতে বাড়িতে হোক বা বাইরে, পায়ে সুতির মোজা পরে থাকতে বলছেন ডার্মাটোলজিস্ট অরিত্র সরকার। তাঁর কথায়, এতে পায়ে ধুলোবালিও কম লাগবে। ওয়াশেবল কভার দেওয়া জুতো পরতে হবে, যাতে পা ঢাকা থাকে। মোজাও নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। বাইরে থেকে পরে আসা মোজা না ধুয়ে কোনও ভাবেই দ্বিতীয় বার ব্যবহার করা যাবে না। পা ধোওয়ার পর সেটি সুতির কাপড়ে ভাল ভাবে মুছে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে হবে।

এ সময় জুতো ঘরের বাইরে রাখলেই ভাল। গ্লাভস পরে জুতোর তলার অংশ সাবান পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। বর্ষাকালে ছত্রাকের সংক্রমণ, হাজা, সেপসিস, সেলুলাইটিসের সমস্যাও দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে সবসময় পা শুকনো ও পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করতে হবে। আঙুলের খাঁজে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল পাউডার ব্যবহার করতে হবে বাইরে বেরনোর আগে। ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণের সমস্যাও দেখা যায় কোনও কোনও ডায়াবেটিক রোগীর ক্ষেত্রে। যাঁদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবিটিস রয়েছে বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের ক্ষেত্রেও পায়ের বিষয়ে করোনা আবহে আরও বেশি সতর্ক থাকতে বলেন অরিত্র বাবু। পায়ে কোনও কাটা জায়গা থাকলে ব্যান্ডেজ লাগানো বাধ্যতামূলক। কাটা অংশ থেকে যাতে কোনওরকম সংক্রমণ না ছড়ায় সে ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।

পায়ের যত্নে রইল কিছু টিপস:

১. গোসলের সময় গরম পানিতে পা ডুবিয়ে রেখে তার মধ্যে শ্যাম্পু দিয়ে রাখতে পারেন। আরাম পাবেন, পা পরিষ্কারও হয়ে যাবে।

২. পা ফেটে যাওয়ার সমস্যা থাকলে অনেক সময় পায়ের খাঁজে ময়লা জমে। সে ক্ষেত্রে পামিস স্টোন দিয়ে স্ক্রাব করে নিলে ময়লা দূর হয়।

৩. পায়ের চামড়া খসখসে হয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে পা পরিষ্কার করে নারকেল তেল কিংবা অলিভ অয়েল মাসাজ করা যেতে পারে।

৪. পেট্রোলিয়াম জেলিও পা ফেটে যাওয়ার সমস্যায় ব্যবহার করা যেতে পারে। রাতে শুতে যাওয়ার আগে ফুট ক্রিম মাসাজ করলে ভাল।

একই সঙ্গে বিধি মেনে মাস্ক পরা, ফেস শিল্ডের ব্যবহার, বাইরে থেকে ফিরে সম্পূর্ণ ভাবে স্যানিটাইজ হওয়ার উপর জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। সূত্র-আনন্দ বাজার পত্রিকা।

জনপ্রিয়