এ.এফ.এম রিয়াজ, বাউফল।।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউপি’র যুবলীগ নেতা তাপস দাসের খুণিদের গ্রেপ্তারের দাবীতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ হয়েছে। সোমবার (২৫ মে) বেলা ১১টায় বাউফল পৌর শহরে ওই বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের প্রায় পাঁচ সহস্রাধিক নেতা কর্মী। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহড় জুরে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
আওয়ামী লীগের দলীয় সুত্রে জানা গেছে, তোরণ নির্মাণকে কেন্দ্র করে গতকাল রবিবার দুপুরে সাবেক চিফ হুইপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ স ম ফিরোজের সমর্থিত নেতা কর্মীদের সাথে বাউফল পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই সময় আ স ম ফিরোজ সমর্থিত যুবলীগ কর্মী তাপস দাস (২৯)কে ধারালো অস্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে মেয়র সমর্থিত কর্মীরা। এ ঘটনায় আহত হয় উভয় পক্ষের ১০ নেতা কর্মী। ওই দিনই গুরুতর আহত অবস্থায় তাপস ও ইমাম নামের আরেক যুবলীগ কর্মীকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসারত অবস্থায় ওই দিনই রাত পৌনে আটায় তাপসের মৃত্যু হয়।
যুবলীগ নেতার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। আজ সোমবার সকালে নিহত তাপসের খুণিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবীতে উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিস জনতা ভবন থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি পৌর শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে জেলা পরিষদ ডাক বাংলোর সামনে ইলিশ চত্বরে সমাবেশ করে।
ওই সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব হাওয়াদারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, পৌর আওয়ামলীগের সভাপতি ও নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, যুবলীগের সাধারন সম্পাদক কালাইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম ফয়সাল আহম্মেদ মনির হোসেন মোল্লা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ব নির্ধারিত স্থানে বিভিন্ন জাতীয় উৎসব উপলক্ষে সরকার প্রধানের শুভেচ্ছাসহ সচেতনতা মূলক বার্তা সংবলিত তোরণ নির্মাণ হয়ে আসছে। কিন্তু পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক ও বাউফলের পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল তার সমর্থিত কর্মীদের নিয়ে ওই স্থানে পরিকল্পিত ভাবে বাউফলকে অশান্ত করার উদ্দেশ্যে তোরণ নির্মাণের চেষ্টা করে। ওই সময় তোরণ নির্মানে নিষেধ করলে পুলিশ প্রশাসনের সামনে তাদের উপর সশস্র হামলা চালায়। ঘটনায় জড়িত পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল ও তার সহযোগীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা না হলে বাউফলের সার্বিক পরিস্থিতি অবনতি ঘটলে তার দায় প্রশাসনকে নিতে হবে বলে হুশিয়ার করেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব হাওয়াদার বলেন, “এ ঘটনায় মেয়র জিয়াউল হক জুয়েলকে হুকুমের আসামী করে বাউফল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।”
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল বলেন, “এ হত্যার সাথে তিনি বা তার কোন নেতা কর্মী জড়িত না। করোনা ভাইরাসের উপর সচেতনতা মূলক একটি সৌজন্য তোরণ করতে গেলে চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুক ও তার লোকজন তাদের উপর হামলা চালায়।”
পটুয়াখালী জেলা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (বাউফল-দশমিনা) মো. ফারুক হোসেন বলেন, “এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”