আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
অগ্নিগর্ভ যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভের ছবি ক্যামেরাবন্দি করতে গিয়ে চোখ হারালেন এক সাংবাদিক। দুই সন্তানের মা লিন্ডা টিরাদো নামে ৩৭ বয়সী ওই সাংবাদিকের দাবি, বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি ছুড়েছে। সে সময় রাবার বুলেট তার চোখে আঘাত করেছে। ফলে চিরদিনের মতোই তার ওই চোখ দৃষ্টি হারালো বলে জানিয়েছেন লিন্ডা।
কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার বিক্ষোভ কভার করতে শুক্রবার ন্যাশভিল থেকে মিনিয়াপলিসে যান ওই চিত্র সাংবাদিক। বিক্ষোভের নানা মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করার সময় হঠাৎ করেই একটি রাবার বুলেট ছিটকে এসে তার চোখে লাগে।
লিন্ডা বলেন, ওই মুহূর্তে মনে হয়েছিল আমার মুখ বিস্ফোরণে উড়ে গেছে। অস্ত্রোপচার করে তার চোখ থেকে গুলি বের করা হলেও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে, তিনি ওই চোখে ভবিষ্যতে আর দেখতে পাবেন না।
অস্ত্রোপচারের পর কমপক্ষে দু’সপ্তাহ আগে তাকে বিশ্রামে থাকতে হবে। রোববার সামাজিক মাধ্যমে নিজের ছবি শেয়ার করেছেন তিনি।
আফ্রিকান-আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েডের হত্যায় গত সপ্তাহ থেকেই উত্তাল আমেরিকা। মিনিয়াপলিস থেকে নিউইয়র্ক হয়ে লস অ্যাঞ্জেলস, সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভের আগুন। টানা চার রাত প্রবল উত্তজেনার পর মিনেসোটায় ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রায় এক সপ্তাহ ধরে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে তা মোকাবিলায় উত্তেজনাপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে আরও ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের নামানোর কথা ভাবা হচ্ছে। কয়েকটি শহরে ইতোমধ্যেই কারফিউ জারি করা হয়েছে।
রাবার বুলেটে লিন্ডার চোখ হারানো কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। শুক্রবার পুলিশের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে আরও অনেক সাংবাদিককে। জর্জ ফ্লয়েডকে নিরস্ত্র অবস্থায় নির্যাতনের পর তার মৃত্যু হয়। তাকে পুলিশের নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতেই বিক্ষোভ দানা বাঁধে। তা থেকেই আন্দোলনের সূত্রপাত।
তার মৃত্যুর দু’দিন পর মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়। ২৭ মে বিক্ষোভকারীরা থানায় আগুন দেয়। পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ৪৬ বছর বয়সী জর্জ ফ্লয়েডকে হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরেছে এক পুলিশ কর্মকর্তা। নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য বারবার আর্তনাদ করতে থাকেন ফ্লয়েড। বাঁচার আকুতি জানান তিনি। কিন্তু পুলিশ ছিল নির্বিকার। এভাবে নির্যাতনের পর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকণ্ডে ইতোমধ্যেই মিনিয়াপোলিস পুলিশ বিভাগের চার কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার পরে বিক্ষোভ সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।