তরিকুল ইসলাম, পিরোজপুর।।
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় সোহরাফ হোসেন হাওলাদার(৬০) নামে এক বৃদ্ধ করোনা উপসর্গ নিয়ে মুত্য ঘটেছে। মৃত ওই বৃদ্ধ গত শনিবার ঢাকা থেকে সর্দি-জ্বর নিয়ে বাড়িতে ফিরে রবিবার (০৭ জুন) দিনগত রাতে নিজ বাড়িতে মারা যান। করোনা উপসর্গে মৃত্যুর ভয়ে পরিবারের স্বজনরা তার লাশ ঘরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে রাতেই ওই বৃদ্ধেও লাশ দাফন করে। লাশের গোছল ও জানাজা পড়ান উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম। মৃত সোহরাব হোসেন সে ঢাকায় সিকিউরিটি গার্ডের চাকুরি করতেন। সে উপজেলার রাজপাশা গ্রামের মৃত আব্দুল গফ্ফার হাওলাদারের ছেলে। সে তিন সন্তানের জনক।
হাসপাতাল ও স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে, রাজপাশা গ্রামের বৃদ্ধ সোহরাফ হোসেন ঢাকা থেকে গত শনিবার সর্দি-জ্বর নিয়ে বাড়িতে আসেন। ওই দিনই সে গুরুতর অসুস্থ বোধ করলে স্বজনরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তার প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। রবিবার রাতে সে হঠাৎ মৃত্যুও কোলে ঢলে পড়েন। সে করোনা আক্রান্ত এমন সন্দেহে পরিবারের স্বজনরা লাশ ঘরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। সেই সাথে মৃত বৃদ্ধেও প্রতিবেশী আপন দুই ভাইও পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা উপজেলা ও থানা প্রশাসনকে খবর দিলে ইউএনও নাজমুল আলম , উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এইচ.এম. জহিরুল ইসলাম ও সহকারি কমিশনার(ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলামসহ থানা পুলিশ রাতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। লাশ উদ্ধার করে মেডিকেল টীম করোনা সংক্রমণ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করে। প্রশাসন পরিবারের স্বজন কাউকে না পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান মোঃ সিদ্দিকুর রহমান টুলুর সহায়তায় এক ব্যাক্তিকে দিয়ে ওই বৃদ্ধেও পারিবারি কবরস্থানে কবর খোড়া হয়। পরে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম নিজেই লাশের গোসল ও জানাজার ইমামতির দায়িত্ব পালন করেন। এভাবে রাত ১২টার দিকে ওই বৃদ্ধের লাশ দাফন সম্পন্ন হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, করোনার সংক্রমণের ভয়ে পরিবারের স্বজনরা লাশ ফেলে পালিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন যথাযথ নিয়ম মেনে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেছে। আমি লাশের গোসল ও জানাজা পড়িয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য স্বজনরা কেউ কাছে আসেননি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এইচ.এম জহিরুল ইসলাম, ওই ব্যাক্তি করোনায় আক্রান্ত কিনা তা এখনও আমরা নিশ্চিত নই। তার নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
ভান্ডারিয়া উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকবর্তা নাজমুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বরেন, মৃত ওই ব্যাক্তি করোনা আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত না। তবে করোনার ভয়ে পরিবারের স্বজনরা তার লাশ ফেলে পালিয়েছেন। এটা দুঃখজনক। খবর পেয়ে প্রশাসন গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গভীর রাতে লাশ দাফন করেছে। তিনি আরও বলেন, প্রশাসন খবর না পেলে আজও হয়তো হতভাগ্য ওই বৃদ্ধের লাশ ঘরে পড়ে থাকতো।