শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ২০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০
মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি(পিরোজপুর)।।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার সাবেক(বর্তমানে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ)ওসি নূরুল ইসলাম বাদলের বিরুদ্ধে আইনী সহায়তা নিতে আসা এক কলেজ ছাত্রীর সাথে অশ্লীল আচরণসহ কু-প্রস্তাব দেয়া ও অশ্লীল ব্যবহারের অভিযোগ ওঠছে।ওই ছাত্রী তৎকালীন ওসির কুপ্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় ওসি বাদল কথিত সাংবাদিকদের মাধ্যমে ছাত্রীর ছবি দিয়ে মিথ্যা ভিডিও ছড়িয়ে ভাইরাল করে ও অসত্য তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ, মামলাসহ বিভিন্ন রকম হুমকি ও হয়রানীর বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
মঙ্গলবার (২৩ মে) দুপুরে উপজেলার দেবত্র গ্রামের রত্তন তালুকদারের মেয়ে ও পাশর্^বর্তী কাঠালিয়া উপজেলার আমুয়া শহীদ রাজা ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি ৩য় বর্ষের ছাত্রী সালমা আক্তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, তার মাদ্রাসা পড়ুয়া ছোট ভাই তাওহিদকে বিদেশে পাঠানোর কথা বললে তাদের পূর্ব পরিচিত আদম ব্যবসায়ী উপজেলার তাফালবাড়ীয়া গ্রামের আলকাজ উদ্দিন ও তার পুত্র সৌদি প্রবাসী নাসির উদ্দিন গত প্রায় দু’বছর আগে তাদের পরিবারের কাছ থেকে এক শ’ টাকার ষ্ট্যাম্পে লিখিত দিয়ে দু’দফায় সাত লক্ষ সতের হাজার (৭,১৭০০০)টাকা গ্রহণ করে। বহু কষ্ট ও দার দেনা করে ওই টাকা দেয়ার পর তাদের পরিবার সর্বশান্ত। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর আদম ব্যবসায়ী আলকাজ ও তার পুত্র নাসির তার ভাইকে বিদেশে পাঠাতে টালবাহানা করে এবং সমুদয় টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পিতা ও পুত্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে গত ২৫ মে’২০২২ তারিখ মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) বরাবরে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। কলেজ ছাত্রীর অভিযোগের দু’দিন পর তৎকালীন থানার অফিসার ইনচার্জ নূরুল ইসলাম বাদল থানার নারী ও শিশু ডেস্কে ডেকে নিয়ে তাকে কুপ্রস্তাব দেন এবং অশ্লীল কথাবার্তা বলেন। কুপ্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওসি নুরুল ইসলাম বাদল পাওনা টাকা আদায়ে কালক্ষেপন করে পিতা ও পুত্রকে তিনবার থানায় উপস্থিত করেও কোন ব্যবস্থা না নিয়ে ছেড়ে দেয়। শুধু তাই নয় ওসি বাদল প্রতিপক্ষ নাসিরকে বিদেশে যেতে সহায়তা করে। ওসি বাদলের বর্তমান কর্মস্তল সাতক্ষিরার শ্যামনগর থানার কথিত সাংবাদিক সোহাগ সরদারের দ্বারা অনলাইন অগ্রযাত্রা ও ফেইসবুকে কলেজ ছাত্রীর ছবি দিয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিডিও ছড়িয়ে ভাইরেল করে।এতে কলেজ ছাত্রীর সামাজিক ভাবে মান সম্মান ক্ষুন্ন হয় এবং এরপর রোক লজ্জার ভয়ে তার কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দেন। এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া থানায় দুটি পৃথক সাধারণ ডায়েরী(জিডি)করা হয় বলে দাবী করেন।
কলেজ ছাত্রী সালমা অফিসার ইনচার্জ বাদলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত ১৪ এপ্রিল-২০২৩তারিখ বাংলাদেশ পুলিশ,বরিশাল রেঞ্চের ডিআইজি বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
সাতক্ষিরার শ্যামনগর থানার বর্তমান ওসি (মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসি) নুরুল ইসলাম বাদল তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবী করেন উল্টো সালমার বিরুদ্ধে আল আমিন নামের এক সাংবাদিক পরিচয়ে তার কাছে চাঁদা দাবীর অভিযোগ আনেন।তিনি আরও বলেন-আমার কর্মকালে যারা মঠবাড়িয়ায় কর্মরত থাকা অবস্থায় আমার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিদা নিতে পারেনি তারাই সালমাকে ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে আমাকে হয়রানী করছে।
বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান কলেজ ছাত্রীর অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন, মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসি নূরুল ইসলামের বিরুদ্দে বিভাগীয় তদন্ত অব্যাহত আছে।