আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
অ্যাটলাস ভি নামে একটি রকেট সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে মার্কিন বিমান বাহিনী। এই রকেটে করে এক গোপন মিশনে এক্স-৩৭- বি নামের একটি মহাকাশযান পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
রোববার (১৭ মে) মহাকাশ কেন্দ্র কেপ ক্যানাভেরল থেকে এই রকেট ছাড়া হয়। শনিবার এটি উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা থাকলেও খারাপ আবহাওয়ার কারণে সেটি একদিন পিছিয়ে দেয়া হয়।
মহাকাশযানটি অরবিটাল টেস্ট ভেহিক্যাল নামেও পরিচিত, যেটি কক্ষপথে একটি উপগ্রহ ছাড়বে। এছাড়াও বিচ্ছুরণ-শক্তি সংক্রান্ত প্রযুক্তি নিয়ে পরীক্ষা চালাবে এটি। মহাকাশে এই রকেটের ষষ্ঠ মিশন এটি।
এই মহাকাশ মিশন করোনাভাইরাস মহামারি যাদের ওপর প্রভাব ফেলেছে এবং এই মহামারি সামাল দিতে যারা সামনের সারিতে থেকে কাজ করছেন তাদের উৎসর্গ করা হয়েছে।
রকেটের গায়ে এই মর্মে একটি বার্তা লেখা হয়েছে এবং তাতে আরো লেখা হয়েছে, ‘শক্তিশালী আমেরিকা’
এক্স-৩৭-বি মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের একটি গোপন কর্মসূচি। অ্যাটলাস রকেট পরিচালনার কাজ করা সংস্থাটির নাম ইউনাইটেড লঞ্চ অ্যালায়েন্স। তাদের বলা হয়েছে এই যাত্রার বিবরণ সংক্রান্ত যেকোনো ধরণের ওয়েবকাস্ট একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর বন্ধ করে দিতে হবে।
পেন্টাগন এই মহাকাশযানের মিশন এবং যানটির সক্ষমতা অর্থাৎ এটি কী করতে পারে, সে সম্পর্কে খুবই কম তথ্য প্রকাশ করেছে। তবে এ মাসের শুরুর দিকে বিমানবাহিনী বিষয়ক মন্ত্রী বারবারা ব্যারেট বলেছিলেন, এক্স-৩৭-বি মিশন এমন কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাবে যা আগের কখনো অন্য কোনো মিশনে চালানো হয়নি।
জানা গেছে, মহাকাশযানটির ভেতরে বীজ এবং অন্যান্য জিনিসের ওপর তেজস্ক্রিয়তার প্রভাব পরীক্ষা করে দেখা হবে।
১৯৯৯ সালে এক্স-৩৭-বি কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল। এই কর্মসূচিতে জড়িত আছে দুটি মহাকাশযান। ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ কর্মসূচিতে ক্রু নিয়ে যেতে পারে এমন যে ছোট আকারের মহাকাশযানগুলো ছিল, যেগুলো এখন আর ব্যবহার হচ্ছে না, তেমনই দুটি মহাকাশযান এই এক্স-৩৭-বি কর্মসূচির কাজে ব্যবহার হচ্ছে।
এগুলো আকাশ দিয়ে ভেসে নিজেই রানওয়েতে অবতরণ করতে পারে। যে ক্ষমতা স্পেস শাটলগুলোর আছে।
বোয়িং-এর তৈরি এই বিমানগুলো সৌরশক্তির মাধ্যমে কক্ষপথে চলে। এগুলো নয় মিটার লম্বা, ডানার বিস্তার প্রায় ১৫ ফুট এবং ওজন ৫ হাজার কিলোগ্রাম।
এই কর্মসূচির প্রথম বিমানটি পাঠানো হয়েছিল ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে। আট মাস মহাকাশে থাকার পর ফিরে এসেছিল সেটি।
সর্বশেষ মিশনটি ছিল, ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে। সেটি ৭৮০ দিন কক্ষপথে ছিল। এর ফলে এই গোপন কর্মসূচি থেকে পাঠানো মহাকাশযান মহাকাশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করার কাজে সর্বমোট ৭ বছরের বেশি সময় নিয়েছে।
রোববার থেকে শুরু হওয়া এই মিশনটি ঠিক কতদিন ধরে চলবে বা এর উদ্দেশ্য কি, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। সেসব তথ্য গোপন রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সূত্র-বিবিসি।