ইন্দুরকানী প্রতিনিধি।।
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে কিশোরীকে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণের ঘটনায় মামা ও পল্লী চিকিৎসকসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সোমবার (১৫ জুন) রাতে নির্যাতিত কিশোরী বাদী হয়ে খালাত মামা উপজেলার বালিপাড়া গ্রামের সাতঘর এলাকার হাফেজ আবুল বাশারের ছেলে জাহিদ হোসেন (৩০), একই গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে বালিপাড়া বাজারের পল্লী চিকিৎসক মনির (২৮) ও আয়নাল ব্যাপারির ছেলে নুরী ব্যপারী (৩২) কে আসামী করে ইন্দুরকানী থানায় ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন আইনে মামলা করেন। ধর্ষিতা কিশোরীকে সেইভ হোমে পাঠিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার বিকালে ধর্ষিতাকে ইন্দুরকানী থানার ওসি তদন্ত মাহবুবুর রহমান পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে ডাক্তারী পরীক্ষা করান। এদিকে কিশোরী কে পিরোজপুর আদালতে ম্যজিষ্ট্রেডের কাছে হাজির করলে আদালতে সে জবানবন্দী প্রদান করেন এবং কিশোরীর কোন অভিভাবক না থাকায় তাকে নিরাপত্তার স্বার্থে সেইভ হোমে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। ধর্ষক মামা জাহিদ, পল্লী চিকিৎসক মনির ও সহায়তাকারী নুরী ব্যপারি ঘঁনার পর থেকে পলাতক রয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বালিপাড়া গ্রামের কবির হোসেনের ভাগনি কিশোরী (১৭) এক সপ্তাহ আগে মামা বাড়ীতে বেড়াতে আসে। দুই দিন পর সে পার্শবর্তী আরেক মামার বাড়ীতে বেড়াতে যায়। ওই কিশোরী ঢাকা তার অন্য মামার বাসায় বেড়াতে যাবে বলে শনিবার সন্ধ্যায় বালিপাড়া বাজারে বাসের টিকিট কাটতে আসলে তার খালাত মামা জাহিদ বাজারের পল্লী চিকিৎসক মনিরের কাছে পাঠায়। মনির তাকে কৌশলে কোমল পানীয়র সাথে চেতনা নাশক কিছু পান করিয়ে অচেতন করে রাতে পশ্চিম বালিপাড়া গ্রামের মনিরের আত্মীয় নুরী ব্যপারীর বাড়ীতে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে আটকে রেখে কিশোরীর মামা জাহিদ, পল্লী চিকিৎসক মনিরসহ আরও একজন কিশোরীকে সারারাত পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং পরের দিন রোববার বিকেলে মেয়েটিকে পুনরায় পশ্চিম বালিপাড়া গ্রামে নিয়ে আসার সময় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা মনির এবং জাহিদকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ণ সৃষ্টি হলে সোমবার ইন্দুরকানী থানা পুলিশ কিশোরীকে তার খালাতো মামা জাহিদের বাড়ী থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। কিশোরীর বাবা-মা বিদেশ থাকে। ঐ কিশোরী বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার আমতলা গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে।
ইন্দুরকানী থানার ওসি তদন্ত ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুর রহমান জানান, কিশোরীকে তার খালাত মামা জাহিদের নেতৃত্বে পল্লী চিকিৎসক মনির মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে। কিশোরী বাদী হয়ে তার মামা, পল্লী চিকিৎসক ও সহায়তাকারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণও নারী নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছে। কিশোরীকে ডাক্তারী পরীক্ষা সহ আদালতে তার জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়েছে এবং কিশোরীকে নিরাপত্তার স্বার্থে সেইভ হোমে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। মামলার আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।