বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪
Menu
Menu

শাওয়াল মাসে ৬ রোজা রাখবেন যে কারণে

Facebook
Twitter

ধর্ম ও জীবন।।

রহমতের মাস রমজান বিদায় নিয়েছে। বছরজুড়ে রোজার সাওয়াব লাভের মাস শাওয়াল চলছে। ঈদের এ মাসে মুমিন মুসলমানের জন্য রয়েছে ফজিলতপূর্ণ ৬ রোজা। ঈদের আনন্দের পর মুমিন মুসলমান ৬ রোজা পালন করলে বছরজুড়ে রোজা রাখার সাওয়াব পাবেন।

ঈদের মাস শাওয়ালে রোজা রাখার ব্যাপারে হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন-

হজরত আবু আইয়ুব আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসের রোজা রাখলো এবং শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা রাখলো, এটি (শাওয়ালের ৬ রোজা) তার জন্য সারা বছর রোজা রাখার সমতুল্য।’ (মুসলিম)

রমজানে তাকওয়ার গুণ অর্জন করা নেককার মুমিন মুসলমান ঈদ পালনের পর বছর জুড়ে রোজার সাওয়াব লাভে শাওয়ালের ৬ রোজা পালন করে থাকেন। এ রোজার রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত ও প্রয়োজনীয়তা। আর তাহলো-

– ঈদের মাস শাওয়ালের ৬ রোজার গুরুত্বকে এভাবে তুলনা করা হয়েছে যে, ফরজ নামাজের পর সুন্নাতে মুআক্কাদার মতো। যা ফরজ নামাজের উপকারিতা ও তার অসম্পূর্ণতাকে পরিপূর্ণ করে। ঠিক ঈদের মাস শাওয়ালের ৬ রোজা রমজানের ফরজ রোজার অসম্পূর্ণতাকে সম্পূর্ণ করে এবং রমজানের রোজায় কোনো ত্রুটি ঘটে থাকলে তা দূর করে থাকে। সে অসম্পূর্ণতা ও ত্রুটি কথা রোজাদারের জানা থাকুক আর না থাকুক।

– রমজানের ফরজ রোজা পালনের পর, ঈদের মাসে পুনরায় রোজা পালনের মানে হলো- রমজানের রোজা কবুল হওয়ার একটি লক্ষণ। যেহেতু মহান আল্লাহ তাআলা যখন কোনো বান্দার নেক আমল কবুল করেন, তখন তার পরেই তাকে আরও নেক আমল করার তাওফিক দান করে থাকেন। যেমন ওলামায়ে কেরামগণ বলে থাকেন, ‘নেক কাজের সাওয়াব হল, তার পরে পুনরায় নেক কাজ করা।

ইমাম নববি রাহমাতুল্লাহু আলাইহি বলেছেন, ‘ঈদুল ফিতরের পরের ৬ দিন ধারাবাহিকভাবে রোজা রাখা উত্তম। যদি কেউ বিরতি দিয়ে রোজা রাখে বা মাসের শেষ দিকে রাখে, তাহলেও হাদিসে ঘোষিত ‘রমজানের পরে’ রোজা রাখার ফজিলত পাওয়া যাবে।

৬ রোজা রাখার সময়: ঈদের মাস শাওয়ালেই ৬ রোজা রাখতে হয়। উত্তম সময় হল ঈদের পরের ৬ দিন। কারণ রমজান ও ঈদ পরবর্তী সময়ে রোজা পালনে রয়েছে নেক আমলের প্রতি ধাবিত হওয়ার প্রমাণ। আর এ কথাই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখার পরপরই শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা পালন করে। তবে সে যেন সারা বছরই সিয়াম বা রোজা পালন করল। (তিরমিজি)

এ হাদিসের উপর ভিত্তি করেই ওলামায়ে কেরামের কিছু অংশ এ ৬ দিনের রোজাকে মোস্তাহাব বলেছেন। তাছাড়া হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মুবারাক বলেন, প্রতি মাসের তিন দিন (আইয়্যামে বিজের) রোজা রাখার মতো শাওয়ালের ৬ দিন রোজা রাখাও উত্তম আমল।

তাহলে কিভাবে রাখবেন ৬ রোজা: শাওয়ালের রোজা ধারাবাহিকভাবে রাখাই ফজিলতপূর্ণ। তবে লাগাতার না রেখে বিচ্ছিন্নভাবেও রাখা যায়। শাওয়াল মাস চলে গেলে তা কাযা করা জরুরি নয়। যেহেতু তা কারো কাছে সুন্নত আবার কারো কাছে মোস্তাহাব। তাই ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছায় হোক যথাসময় পার হয়ে গেলে তা কাজা করা আবশ্যক নয়। সুতরাং সম্ভব হলে ঈদের পরপরই এ রোজা একাধারে পালন করা। অথবা বিচ্ছিন্নভাবেও এ রোজা পালন করা যায়।

মনে রাখতে হবে: শাওয়ালের ৬ রোজায় বছরজুড়ে রোজা রাখার ফজিলত ওই ব্যক্তির জন্যই কার্যকর হবে, যে ব্যক্তি রমজান মাসজুড়ে ফরজ রোজা আদায় করেছেন এবং শাওয়ালের রোজা পালন করেন।

আবার যাদের রমজানের রোজার ভাংতি বা কাজা আছে, তাদের জন্য শাওয়ালের রোজা রাখা জরুরি নয়। সেক্ষেত্রে আগে রমজানের রোজার কাজা আদায় করে নেয়া জরুরি। তারপর সম্ভব হলে শাওয়ালের রোজা আদায় করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজান পরবর্তী সাওয়াল মাসের ৬ রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। এ রোজা পালনের মাধ্যমে ঘোষিত ফজিলত অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

জনপ্রিয়