শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ২০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০
জাকিরুল আহসান ও সাইফউদ্দিন মিলন।।
আপনি মা। সদ্য জন্ম নেয়া শিশুটি আপনার আদরের সন্তান। সব মা-বাবাই চায় তার সন্তান বেড়ে উঠুক আদর্শ মানুষ হয়ে। এজন্য আপনি শিশুর যত্নে আশপাশের মানুষের পরামর্শ নিচ্ছেন। সবার কাছ থেকে পাচ্ছেন পরস্পর বিরোধী পরামর্শ। যা আপনার জন্য হতে পারে বিভ্রান্তিকর। তাই আপনার আদরের সন্তানের শরীরিক গঠন ও মেধা বিকাশে করণীয় নিয়ে রূপালী বার্তার এই বিশেষ আয়োজন। আমাদের সঙ্গে শিশুর পরিচর্যা নিয়ে কথা বলেছেন, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (শিশু বিভাগ) এর সাবেক সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মো: আলী হাসান।
রূপালী বার্তা: নবজাতক শিশুর পরিচর্যার শুরুটা কেমন হওয়া উচিত?
ডাঃ মো: আলী হাসান: জন্মের পর শূন্য থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত, বলা হয় নবজাতক। একজন নারী গর্ভাবস্থায় থাকে, তখন থেকে নবজাতকের পরিচর্যা শুরু হয়। গর্ভবতী মা সঠিক পুষ্টি পাচ্ছে কি না দেখতে হবে। কারণ, এই পুষ্টি বাচ্চার শরীরের ওপর নির্ভর করবে। সেই মাকে আপনি একটি শান্ত পরিবেশ দিচ্ছেন কি না দেখতে হবে। কারণ, মা যদি চাপযুক্ত জীবনযাপন করে, সেই প্রভাবটা তার পেটে যে বাচ্চাটা রয়েছে তার ওপর পড়বে।
রূপালী বার্তা: জন্মের পরের পরিচর্যা কেমন হবে।
ডাঃ মো: আলী হাসান: পরেরটা হচ্ছে শারীরিক ও মানসিকভাবে শিশুর বেড়ে ওঠা। মানসিক বিকাশ বলতে, যে বয়সে যেরকম দক্ষ হয়ে ওঠার কথা সেটা হতে পারছে কি না। তবে একটা বিষয় হচ্ছে মাতৃগর্ভে থাকাকালীন সময় কোন সমস্যা হয়েছে কি না। যদি সে জন্মই নেয় সমস্যা নিয়ে তাহলে জন্মের পর আপনি যা-ই করেন কাজ হবে না। তাই বাচ্চার মেধা বিকাশ দুটি পর্যায়ে হয়ে থাকে। যদি মায়ের জরায়ু সুস্থ থাকে সেটা। আরেকটা হচ্ছে জন্মের পরের সঠিক পরিচর্যা। দেখা গেল মায়ের জরায়ুতে টিউমার আছে, ওটা যায়গা নিয়ে রেখেছে ব্রেইন বেড়ে উঠতে পারলো না। তাহলে জন্মের পর শত চেষ্টা করেও মেধা বিকাশে খুব বেশি ফল হবে না। দেখা গেল দেহ বড় হলেও মেধা সেইভাবে হলো না।
রূপালী বার্তা: এই যে বললেন, সমস্যা নিয়েই নবজাতক জন্ম নেয়া, এটা একজন মা কিভাবে বুঝতে পারবেন?
ডাঃ মো: আলী হাসান: একজন গর্ভবতী নারীকে অন্তত চারটি চেকআপ করতে হবে। এই চারটি চেকআপ করে আপনাকে দেখতে হবে পেটের মধ্যে বাচ্চার কোনো সমস্যা হলো কি না। বাচ্চা ঠিকমতো নড়াচড়া করছে কি না। বাচ্চার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ঠিকমতো তৈরি হয়েছে কি না। গর্ভাবস্থায় মায়ের ডায়াবেটিস তৈরি হলো কি না, অথবা তার উচ্চ রক্তচাপ তৈরি হলো কি না, অথবা তার খিচুনি জনিত কোনো রোগ তৈরি হলো কি না। কারণ, এই জিনিসগুলো পেটে যে বাচ্চাটা রয়েছে, তার ওপর প্রভাব ফেলে। এছাড়া তার জরায়ুতে টিউমার আছে কি না সেটাও ধরা পড়বে।
রূপালী বার্তা: গর্বভতী মা পরীক্ষা করে বুঝলেন জরায়ুতে সমস্যা আছে তখন করণীয় কি?
ডাঃ মো: আলী হাসান: গর্বভতী মায়ের এই পর্যায়ে তেমন কিছু করার থাকে না। এজন্যই একজন নারীকে সচেতন থাকতে হয়। কারণ তিনি যে বাচ্চা নেবেন তার শরীর উপযুক্ত আছে কি না। তার জরায়ুতে টিউমার বা অন্য কিছু থাকলে অবশ্যই শারীরিক লক্ষণ থাকবে। এটা তো একদিনে হয়নি। তখন চিকিৎসকের কাছে গেলে হয়তো সমস্যার সমাধান করা যাবে। চলবে..
(প্রিয় পাঠক, এই পর্বে গেল শিশুর জন্মের আগে মায়ের প্রস্তুতি নিয়ে, পরের পর্বে থাকবে জন্মের পরে শিশুর শারীরিক গঠন ও মেধা বিকাশে করণীয় নিয়ে বিস্তারিত তথ্য, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে আমাদের সঙ্গে থাকুন… ধন্যবাদ)