রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Menu
Menu

সন্ত্রাসী হামলায় মা হারানো ২০ শিশুকে স্তন্যপান করালেন এই নারী

Facebook
Twitter

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের একটি হাসপাতালে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় মা হারানো ২০ এতিম শিশুকে স্তন্যপান করিয়ে অনন্য নজির গড়েছেন এক নারী। তার নাম ফিরোজা ইউনুস ওমর।

গত মঙ্গলবার তিনজন বন্দুকধারী কাবুলের দাশত-ই-বারচি হাসপাতালটিতে অতর্কিত হামলা চালায়। ওই হামলায় অন্তত ২৪ জনকে তারা হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে প্রসূতি, নবজাতক ও চিকিৎসকও রয়েছে।

মা হারানো শিশুদেরকে স্তন্যপান করানো সম্পর্কে ফিরোজা আল-জাজিরাকে বলেন, “হাসপাতালে হামলার খবর শোনার পরই আমি সেখানে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে আমার মনে হয় এই শিশুগুলোর খুব প্রয়োজন তাদের মাদেরকে। কিন্তু যেহেতু সন্ত্রাসী হামলায় তাদের মাদের মৃত্যু হয়েছে, তাই আমিই তাদের মায়ের ভূমিকা পালণ করা শুরু করি। তাদেরকে জড়িয়ে ধরি ও স্তন্যপান করাতে থাকি।”

তিনি আরো বলেন, “ওই শিশুদেরকে স্তন্যপান করানোর সময় একবারও মনে হয়নি যে ওরা অন্য কোনো নারীর সন্তান। মনে হয়েছে আমি নিজের সন্তানকেই স্তন্য পান করাচ্ছি।”

সন্ত্রাসী হামলা সম্পর্কে ফিরোজা বলেন, “আফগানিস্তানে যারা মানবিকতা ধ্বংস করে দিতে চায়, তারাই এই হামলা চালিয়েছে। সদ্য জন্ম নেয়া শিশুদেরকেও ছাড়েনি তারা।”

২০১৭ সালে ফিরোজার বড়ভাই মোহাম্মদ ওমর নিজের জন্মদিনে তালেবান হামলায় মারা যান। আট বছর বয়সী এক ছেলে ও পাঁচ বছর বয়সী এক মেয়ে’কে রেখে যান তিনি।

সেই স্মৃতি স্মরণ করে ফিরোজা বলেন, “আফগানিস্তানে চলমান যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে আমি একজন। স্বজন হারানোর বেদনা কেমন, তা আমি জানি।”

হাসপাতালে হামলার প্রতক্ষ্যদর্শীদের মতে, মূলত প্রসূতিদেরকে হত্যার উদেশ্যেই হামলাটি চালানো হয়। কারণ হাসপাতালটির অন্য সব ওয়ার্ড বাদ দিয়ে বন্দুকধারীরা কেবল প্রসূতি ওয়ার্ডকেই হামলার লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছিলো।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলার সময় প্রসূতি ওয়ার্ডে মোট ২৬ জন নতুন মা ও গর্ভবতী ছিলেন। সন্ত্রাসীরা তাদের মধ্যে তিনজন নারীকে ডেলিভ্যারি কক্ষে ও আটজনকে হাসপাতালের বিছানায় হত্যা করা হয়।

এ ঘটনার পর অন্তত ১২ জন শিশুর কোনো ধরনের অভিভাবক খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এদিকে মা হারানো শিশুদেরকে সাহায্যে ফিরোজার এগিয়ে আসা দেখে অনুপ্রাণীত হয়ে আরো বেশ ক’জন আফগান নারী এগিয়ে এসেছেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন কাবুল নিবাসী আজিজা কেরমানি। তিনিও বেশ কিছু শিশুর যত্ন নিচ্ছেন।

এখন পর্যন্ত কোনো দল বা গোষ্ঠি হাসপাতালে চালানো এই বর্বরোচিত হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে ধারনা করা হচ্ছে তালেবান বা আইএস জঙ্গি গোষ্ঠির সদস্যরা এই হামলাটি চালিয়েছে।

জনপ্রিয়