জাকিরুল আহসান।।
করোনা সংক্রমণের পর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে রোগীকে বাঁচাতে সবার আগে যেটি দরকার, সেই ‘হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা’ দেয়ার জন্য এগিয়ে এসেছেন বরিশালের কয়েকজন বিত্তবান। এমইপি, সুন্দরবন ও অমৃত লাল দে পরিবারের পক্ষ থেকে ‘হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা’ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। বিষয়টি রূপালী বার্তাকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ)-এর বরিশাল শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ মোঃ মাসরেফুল ইসলাম সৈকত।
তিনি বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে বরিশালের সিনিয়র চিকিৎসক ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন এর নেতৃবৃন্দ বিত্তবানদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এতে কেউ কেউ সাড়াও দিয়েছেন। এমইপি গ্রুপের পক্ষ থেকে ৩টি দিবেন বলে গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ডা. জাহাঙ্গীর আলম চাকলাদার চিকিৎসকদের নিশ্চিত করেছেন। সুন্দরবন গ্রুপ ও উপজেলার চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু ১ টি এবং অমৃত লাল দে পরিবারের পক্ষ থেকে ১ টি দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে করে মোট ৫ টি দেয়ার আশ্বাস পাওয়া গেছে, যেখানে কমপক্ষে ১০টি ‘হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা’ দরকার। এখনও অনেক বিত্তবানরা আছেন যাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
এর আগে করোনায় আক্রান্ত অসহায় মানুষকে বাঁচাতে বিত্তবানদের কাছে সহযোগীতার আহবান জানান, বরিশালের চিকিৎসকরা। এ সময় বলা হয়েছিল- রোগীর ক্রিটিক্যাল মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরী ‘হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলা’। সাধারণ মাস্কে সর্বোচ্চ ৪০ পারসেন্ট অক্সিজেন সরবরাহ করা যায়, সেখানে ‘হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলাতে’ প্রায় (শতভাগ) ১০০ পারসেন্ট অক্সিজেন সরবরাহ করা যায়, যদি সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ লাইন সচল থাকে। অথচ এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বরিশাল বিভাগের কোন হাসপাতালে একটিও জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেন সরবরাহের যন্ত্র ‘হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলা’নেই।
জানা গেছে, ৬ জেলা আর ৪২ উপজেলায় বসবাসকারী প্রায় ৮৬ লাখ মানুষের জন্য আইসিইউ বেড রয়েছে মাত্র ২৮টি। তার মধ্যে ১০টি সাধারণ রোগীদের জন্য। বর্তমানে পুরো বিভাগে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেড় হাজারের মতো’। সেখানে কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য আইসিইউ বেড রয়েছে মাত্র ১৮টি। এসব আইসিইউ বেড দেখভালের জন্য নেই কোনো আইসিইউ বিভাগ। ডা. নাজমুল নামে একজন চিকিৎসক আইসিইউ বিভাগ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ঢাকায়। তিনি আর একজন নার্সই আছেন আইসিইউতে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা দিতে।
শেবাচিম হাসপাতালের ইনডোর ডক্টরর্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. সুদীপ হালদার রূপালী বার্তাকে বলেন, আইসিইউ বা ভেন্টিলেশনে নেয়ার আগে এই ক্যানুলার মাধ্যমে অক্সিজেন দিতে পারলে সিংহভাগ রোগীই বেঁচে যেত বলে আমাদের বিশ্বাস। তিনি বলেন, দক্ষিণবঙ্গে জাতীয় সব নেতাদের বাস, অনেক চিকিৎসক নেতা আছেন, প্রশাসনের অনেক বড় ব্যক্তিবর্গ আছেন, বড় মাপের সাংবাদিকগণের পিতৃভূমি এই বরিশালে। আপনাদের স্বার্থে, আপনাদের পরিবার তথা আত্মীয় স্বজনের স্বার্থে, বাঁচার স্বার্থে, আমার মত আম জনতার স্বার্থে দক্ষিণ জনপদের শেষ আশ্রয়স্থল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটার দিকে একটু নজর দিন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বিত্তবান কেউ সাহায্য করতে চাইলে চার জনের সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তবে নগদ টাকা গ্রহনযোগ্য নয়, সরাসরি (ইমপোর্টার) আমদানীকারক এর সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেয়া হবে।
যোগাযোগ করতে হবে- বিএমএ সভাপতি সভাপতি ডা. মোঃ ইসতিয়াক হোসেন- 01711734502, অধ্যাপক ডা. জহুরুল হক মানিক 01713460487, অধ্যাপক ডা. বিপ্লব কুমার দাস 01711190944 ও বিএমএ সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডাঃ মনিরুজ্জামান শাহীন 01711312764.