স্বাস্থ্য-চিকিৎসা ডেস্ক।।
সবারই খুব পরিচিত একটি শাক হচ্ছে পাটশাক। যা খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিকরও। এখন বাজারে খুব সহজেই পাওয়া যাবে পাটশাক। এর দামও খুব বেশি নয়। বাজারে দুই ধরনের পাটশাক পাওয়া যায়। একটি তিতা অন্যটি মিষ্টি পাটশাক। যে যার পছন্দের পাটশাক খেয়ে থাকেন। তবে দুটির স্বাস্থ্যগুণই এক।
পাটশাকে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, সেলেনিয়াম এবং ভিটামিন সি, ই, কে, বি- ৬ এবং নিয়াসিন রয়েছে। এছাড়া পাটশাকে রয়েছে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যারোটিন এবং খাদ্যআঁশ। প্রতি ১০০ গ্রাম পাটশাকে রয়েছে খাদ্যশক্তি ৭৩ কিলোক্যালরি, আমিষ ৩.৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৯৮ মিলিগ্রাম, লোহা ১১ মিলিগ্রাম ও ক্যারোটিন ৬৪০০ (আইইউ)।
পাটশাকে থাকা এই পুষ্টি উপাদানগুলো আমাদের কঠিন সব রোগবালাই থেকে দূরে রাখে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই পাটশাক রাখুন। চলুন এবার জেনে নেয়া যাক পাটশাক উপকারিতাগুলো-
হাড়ের ক্ষয় রোধ করে: প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়ামে ভরপুর পাটশাক। যা আমাদের হাড় ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং হাড়ের ক্ষয় রোধ করে। এতে থাকা আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান হাড় গঠন ও ক্ষয়পূরণ করে এবং হাড় ভঙ্গুরতা রোধ করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: পাটশাকে রয়েছে ভিটামিন এ, ই এবং সি। যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এতে থাকা ভিটামিন সি ও ক্যারোটিন মুখের ঘা দূর করতে সাহায্য করে। তাছাড়া ভিটামিন-সি রক্তের শ্বেত কনিকা বৃদ্ধি করে এবং ভিটামিন-এ, ভিটামিন ই চোখ, হৃদপিণ্ডসহ অন্যান্য অঙ্গের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
উচ্চ রক্তচাপ দূর করে: পাটশাকে রয়েছে উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম। ফলে এটি আমাদের রক্তসঞ্চালন ও রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। এতে উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা দূর হয়। এছাড়া পাটশাক রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। নিয়মিত খেলে হার্ট অ্যাটাক এবং ষ্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।
মুখের রুচি বাড়ায়: খাওয়ার রুচি বাড়াতে চাইলে পাটশাক খান। এই শাক মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনে ও মেদ বৃদ্ধির আশঙ্কা কমায়। পাটশাকের তেতো স্বাদ মুখে লালা ক্ষরণ করে শ্বেতসারকে ভাঙতে সাহায্য করে। এতে হজমের সুবিধা হয় ফলে খাবারের রুচি বাড়ে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: পাটশাকে থাকা খাদ্যআঁশ হজম প্রক্রিয়াকে দারুণভাবে ত্বরান্বিত করে। যা আমাদের হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
বাতের ব্যথা দূর করে: পাটশাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-ই রয়েছে। ভিটামিন-ই গেঁটেবাত, আর্থরাইটস এবং প্রদাহ জনিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই এসব রোগের জন্য পাটশাক একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ্য।
ক্যানসার রোধে সহায়ক: পাটশাকে থাকা উচ্চমাত্রার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরে যে কোনো ধরনের ক্যানসার রোধে সহায়তা করে। এতে বিদ্যমান ফলিক অ্যাসিড ত্বক ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং মানসিক চাপ দূর করে শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
নিদ্রাহীনতা দূর করে: পাটশাকে থাকা ম্যাগনেশিয়াম উপাদান শরীরে প্রয়োজনীয় হরমোন উৎপাদন করে। যা স্নায়ুতন্ত্র শান্ত রাখে এবং নিরবচ্ছিন্ন নিদ্রা নিশ্চিত করে। তাই ভালো ঘুমের জন্য পাটশাক খাওয়া উপকারী।
হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়ক: প্রচুর পরিমাণ আয়রন সমৃদ্ধ এই শাক। যা আমাদের রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়তা করে। তাছাড়া এতে থাকা আয়রন দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা এবং কর্মদক্ষতাও বৃদ্ধি করে।
সূএ-ডেইলি বাংলাদেশ।