শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ, ১৪৩১
ভূঁইয়া কামাল, মুলাদী (বরিশাল)।।
মুলাদীতে নিষিদ্ধ বাঁধাজালে নিধন হচ্ছে ছোট মাছ ও রেনু পোনা। উপজেলার জয়ন্তী ও আড়িয়ালখাঁ নদীতে অবৈধভাবে বাঁধাজাল দিয়ে মাছ শিকার করছেন অসাধু জেলেরা। প্রকৃত জেলেরাই এসব বাঁধাজাল দিয়ে মাছ ধরা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, উপজেলার জয়ন্তী নদীর বাটামারা ইউনিয়নের চরবাটামারা, নাজিরপুর সাহেবেরচর, নাতিরহাট, ভূঁইয়া বাড়ি মুন্সীরহাট এলাকায় বাঁধাজাল দিয়ে মাছ শিকার হয়। আড়িয়ালখাঁ নদে আলীমাবাদ রামচর, পশ্চিম তেরচর রাস্তার মাথা, মনষাগঞ্জ, নন্দীরবাজার, মিয়ারচর, কাশিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় বাঁধাজাল ফেলেন জেলেরা।
বাঁধাজাল থেকে ছোট রেনু পোনা বেড়িয়ে যেতে পারেনা। বাঁধাজাল দিয়ে শিকারীরা বেশি ভাগ সময়ে রাতের আধারে মাছ ধরেন। অপেক্ষাকৃত বড় মাছগুলো বাজারে বিক্রি করেন। ছোট মাছগুলোএলাকা ঘুরে বাড়িতে গিয়ে বিক্রি করেন। পরিবারের নারী ও শিশুদের দিয়ে ছোট মাছ বিক্রি করাহয়। যেসব রেনু পোনা খাওয়ার অযোগ্য সেগুলো নদীতে ফেলে দেয়া হয়।
আড়িয়াল খাঁ নদীর জেলে জামাল হোসেন জানান, বাঁধাজালে অনেক ছোট ছোট ফাঁস। অনেকটা মশারির মতো। কিছু বাঁধাজাল মশারির চেয়েও ছোট। এগুলোনদীতে এমনভাবে ফেলা হয়, যেখানে মাছ ঢুকতে পারে কিন্তু বের হতে পারে না। নদীতে বড় মাছের সাথে ছোটমাছ ও রেনু পোনা থাকে। বাধাজালে বড় মাছের সাথে রেনু পোনাগুলোও ধরা পরে। জেলেরা বড় মাছ বিক্রি করতে পারলেও রেনুপোনা নষ্ট হয়ে যায়। এতে পোয়া, বাইলা, শিলং, বাইম মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।
কাঠেরচর গ্রামের জেলে রেজাউল ফকির জানান, প্রকৃত জেলেরা মৎস্য সম্পদ রক্ষার জন্য ছোটমাছ ও রেনু পোনা রক্ষায় সচেষ্ট রয়েছে। কিছু অসাধু জেলে মৎস্য দপ্তর ও স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজকরে অবৈধ বাঁধাজাল দিয়ে মাছ শিকার করছে। এতে বড় মাছের সাথে ছোটমাছ ও রেনু পোনা ধ্বংস হচ্ছে। বাঁধাজাল ব্যবহার বন্ধ না হলে নদীতে ভবিষ্যতে মাছের সংখ্যা কমে যাবে।
রামচর গ্রামের আবুলখায়ের জানান, সকাল হলেই জেলেরা ছোটমাছ বাড়িতে নিয়ে আসে। ঢালায় করে নিয়ে আসা মাছ ৫০/১০০টাকা ভাগ হিসেবে বিক্রি করে। অনেক ক্ষেত্রেই কাচকি মাছ হিসেবে প্রচার করে বিক্রি করে। কিন্তু এগুলো বাইলা, বাইম, চিংড়ির ছোট মাছ। অনেক ছোট ফাঁসের জাল ছাড়া এগুলোধরা সম্ভব নয়। এভাবে মাছ নিধন হলে আগামী দিনে বাজারে দেশিয় প্রজাতির মাছ দেখা যাবে না। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করেছেন আগামী দিনে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুব্রত গোস্বামী বলেন, বাঁধাজাল দিয়ে মাছ শিকার নিষিদ্ধ। কিছু অসাধু জেলে রাতের আধারে এসব জাল দিয়ে মাছ শিকার করেন। বিষয়টি জেনেছি। অভিযান চালিয়ে এসব বাঁধাজাল বন্ধ করা হবে। যারা অবৈধজাল ব্যবহার করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।