শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ, ১৪৩১
বিশেষ প্রতিবেদক।।
দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে বরিশাল সিটি কলেজ। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থেকে অফিস সহকারি পর্যন্ত এ দুর্নীতির বিস্তার। করোনাকালীন প্রদান করা উপবৃত্তির টাকা নিয়েও হচ্ছে দুর্নীতি। সরাসরি এসব ক্ষেত্রের দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে বাড়ছে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা ব্যয়। বিঘ্নিত হচ্ছে প্রকৃত জ্ঞান অর্জন ও শিক্ষা কার্যক্রম। দীর্ঘ ৭ বছরধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ আকড়ে রাখার কারণে উন্নয়ন বঞ্চিত প্রতিষ্ঠানটি। মানা হচ্ছেনা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মনীতি।
গত ১৫ জুন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কলেজ পরিদর্শক ফাহিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত (০৭-ব-২২৯, জাতীঃ বিঃ/কঃপঃ/ কোড-১১০৫/৫৪৪৬৬) নং স্মারকে পাঠানো এক পত্রের মাধ্যমে জানায়ায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালরে অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ চাকুরীর শর্তাবলী রেজুলেশন অনুযায়ী উপাধ্যক্ষ বা জ্যেষ্ঠ্যতম ৫জন শিক্ষকের মধ্য থেকে যে কোন একজনকে বরিশাল সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দ্বায়িত্ব প্রদান করতে বলা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে সুজিত কুমার দেবনাথ কর্তৃক কোন প্রকার আবেদন বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রহণ করা হবে না বলেও স্মারকে উল্লেখ করা হয়েছে।
একই দিনে (০৭-ব-২২৯, জাতীঃ বিঃ/কঃপঃ/ কোড-১১০৫/৫৪৪৬৭) নং স্মারকে পাঠানো অপর পত্রের মাধ্যমে বরিশাল সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুজিত কুমার দেবনাথ এর দ্বায়িত্বকালীন সকল আয়-ব্যয়ের হিসাব অভ্যন্তরীণ অডিটের মাধ্যমে যাচাইপূর্বক প্রামাণ্য তথ্যাদিসহ প্রতিবেদন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করতে বলা হয়েছে।
এসকল আদেশকে কর্নপাত না করে চেয়ার আকড়ে থেকে ভবিষ্যতে অধ্যক্ষ হওয়ার জন্য বিভিন্ন কর্তা ব্যক্তিদের কাছে দৌড়াচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুজিত কুমার দেবনাথ। এতে হতাশা দেখা দিচ্ছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে। উন্নয়ন বঞ্চিত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। শিক্ষার্থীদের অন্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরিত করার ব্যবস্থা শুরু করছেন অভিভাবকরা।
আমিনুল ইসলাম নামের এক অভিভাবক বলেন, ভবিষ্যতে এই প্রতিষ্ঠানটি (বরিশাল সিটি কলেজ) উন্নয়ন বঞ্চিত বা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ক্ষতি হলে তার দায়ভার সুজিত স্যারকেই নিতে হবে। আমি আমার সন্তানকে অন্য কলেজে স্থানান্তর করবো এজন্য সকল কাগজপত্র রেডি করেছি।
লিমা (ছদ্ম নাম) নামের এক শিক্ষার্থী জানান-উপবৃত্তি দেয়া হবে এই মর্মেগত ২৮ আগস্টসুজিত স্যার স্বাক্ষরিতকলেজে একটি নোটিশ টানানো হয়। নোটিশে০১৯৪৬৪০..৫নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলা হয়। উক্ত নাম্বারটিতে যোগাযোগ করলে ওটিপি কোড চাওয়া হয়। ওটিপি কোডের ব্যাপারটি প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী আউয়াল কে জানালে তিনি দিতে বলেন। দেয়ারপর দেখিবিকাশে কোন টাকা নাই, সব কোথায় যেন চলে গেছে।
এই ব্যাপারে তিনি বরিশাল শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এঘটনায় অফিস সহকারি আউয়াল বলেন-প্রতারক তাদের ফোন দিয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের না করেছি ওটিপি কোড না দেয়ার জন্য।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুজিত কুমার দেবনাথ’র কাছে মুঠোফোনে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন-অফিসে আসেন, চা খেতে খেতে কথা বলবো।
প্রতিষ্ঠানের সভাপতি অ্যাডভোকেট কে.বি.এস আহম্মেদ কবির’র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন-জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া চিঠির ব্যাখ্যা পাঠিয়েছি। উপাধ্যক্ষ আরো আগে অবসর নিয়েছেন। বর্তমানেসিনিয়র শিক্ষকযারা আছেন তারা জামায়াত-বিএনপির লোক। আমরা আগামী একমাসের মধ্যে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়ার চেষ্টায় আছি।