শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ, ১৪৩১
অনলাইন ডেস্ক।।
‘হাতিরঝিলে ঘুরতে গিয়েছিলাম, বাসায় ফেরার পর জ্বর ওঠে। এরপর হাসপাতালে ভর্তি হই। পরীক্ষার পর ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি। এখনও সুস্থ হইনি।’
কথাগুলো বলছিলেন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন জামালপুরের কলেজছাত্রী সুমাইয়া আক্তার।
তিনি বলেন, ‘৯ অক্টোবর পরিবারের সঙ্গে ঢাকার হাতিরঝিলে ঘুরতে গিয়েছিলাম। ১০ অক্টোবর বাড়িতে ফেরার পর জ্বর এবং মাথাব্যথা শুরু হয়। ওই দিন কয়েকবার বমিও হয়েছিল। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শের ওষুধ খাই। তিন দিনেও জ্বর, মাথাব্যথা ভালো না হওয়ায় শনিবার (১৫ অক্টোবর) ময়মনসিংহ মেডিক্যালে ভর্তি হই। এরপর থেকেই চিকিৎসা চলছে। এখনও শরীর দুর্বল। তবে শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতির দিকে। মূলত হাতিরঝিলে গিয়েই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছি। সেখানে ওই দিন প্রচুর মশার উৎপাত দেখেছি।’
এদিকে, রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের জন্য ৫০ বেডের ডেঙ্গু আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। বুধবার (১৯ অক্টোবর) থেকে এই ওয়ার্ড চালু করা হয়।
ডেঙ্গু-২ রোগী বেড়ে যাওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিক্যালে ৫০ বেডের ডেঙ্গু আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ২৭৭ রোগী হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে চলতি অক্টোবর মাসে ১৪৫ রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। শুক্রবার (২১ অক্টোবর) বিকাল পর্যন্ত আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৪৯ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন জামাল হোসেন বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা আইসোলেশন ওয়ার্ড করায় খুব ভালো হয়েছে। ওয়ার্ড পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং সকল ওষুধপত্রসহ ভালো চিকিৎসাসেবা পাওয়া যাচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। সময়মতো চিকিৎসা দিচ্ছেন।’
ডেঙ্গু আইসোলেশন পুরুষ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ময়মনসিংহের ধোবাউড়ার রাজীব হাসান জানান, তিনি গাজীপুরে একটি গার্মেন্টস কারখানায় কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর হিসেবে চাকরি করেন। গত মঙ্গলবার শরীরে জ্বর ও মাথাব্যথা শুরু হয়। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে জ্বর মাথাব্যথা ওষুধ খাওয়ার পরও কাজ না হওয়ায় বুধবার (১৯ অক্টোবর) ময়মনসিংহ মেডিক্যালে এসে ডাক্তার দেখান। এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারেন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তারপর থেকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘চিকিৎসক বলেছেনম রক্তের প্লাটিলেট কমে গেছে। রক্ত দিতে হবে। আমার গার্মেন্টসে কর্মরত বেশ কয়েকজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘দিন দিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের তিনতলায় ৫০ বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। রোগীর সংখ্যা যদি আরও বেড়ে যায় বেডের সংখ্যা বাড়ানো হবে। ওষুধসহ সব ধরনের ব্যবস্থাপনা রয়েছে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসক-নার্স এবং অন্যান্য কর্মচারী রোগীদের সেবায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছেন।’