শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ, ১৪৩১
গোলাম কিবরিয়া, বরগুনা।।
বরগুনার আমতলীর গুলিশাখালী গ্রামে ৩ লক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য লিজা বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূকে দু’দফা নির্যাতনের করে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে আমতলী থানার পুলিশ গুরুতর আহত ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে মঙ্গলবার বিকেলে আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
নির্যাতিত ওই গৃহবধূ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আঠারগাছিয়া গ্রামের মিলন তালুকদারের মেয়ে লিজা বেগমরে সাথে গুলিশাখালী ইউনিয়নের গুলিশাখালী গ্রামের মানিক গাজীর ছেলে নান্নু গাজীর সাথে ২০১৭ সারের ৫ জানুয়ারি বিয়ে হয়।
বিয়ের সময় লিজার বাবা মিলন তালুকদার মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ১ ভরি স্বর্নের কানের দুল, গলার চেইন ও জামাই নান্নু গাজীকে গলার চেইনসহ সংসার সাজানোর জন্য প্রায় ২ লক্ষ টাকার মালামাল কিনে দেন। যৌতুক লোভী স্বামী নান্নু গাজী লিজার বাবার বাড়ী থেকে ব্যবসার জন্য প্রায়ই টাকা এনে দিতে বলত। লিজাও সাধ্যমত বাবার নিকট থেকে টাকা এনে দিত। স্বামীর চাহিদা মত টাকা এনে না দিলেই স্ত্রী লিজার উপর চলত নির্যাতন।
শনিবার স্বামী নান্নু গাজী স্ত্রী লিজা বেগমকে তার বাবার বাড়ী থেকে ৩ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলেন। লিজা বাবার বাড়ি থেকে এত টাকা এনে দিতে অস্বীকার করলে স্বামী নান্নু গাজী মেহগিনি গাছের ডাল দিয়ে মারধর করে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন।
মারধরে সহায়তা করেন নান্নুর বাবা মানিক গাজী, ভাসুর শাহীন গাজী ও মোখলেছ গাজী। যৌতুকের টাকা এনে না দেওয়া মঙ্গলবার সকালে স্বামী নান্নু গাজী শ্বশুর মানিক গাজী, ভাসুর শাহীন গাজী ও মোখলেছ গাজী মেহগিনি গাছের ডাল দিয়ে দ্বিতীয় দফা পিটিয়ে রক্তাত্ব জখম করে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন।
লিজার বাবা মেয়েকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে ঘরে তালবদ্ধ করে রাখার খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ‘৯৯৯’ ফোন করেন। সেখান থেকে আমতলী থানাকে জানালে আমতলী থানার এসআই ইমাম হোসেন গুলিশাখালী গ্রামের নান্নু গাজীর ঘর থেকে গৃহবধূ লিজাকে গুরুতর আহত অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪ টার সময় উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন।
নান্নু গাজীর বাবা মানিক গাজী বলেন, ছেলের বউ কথা শোনে না তাই মারধর করেছি।
গৃহবধূ লিজার বাবা মিলন তালুকদার জানান, যৌতুকের জন্য নান্নু গাজী শ্বশুর মানিক গাজী, ভাসুর শাহীন গাজী ও মোখলেছ গাজী প্রায়ই আমার মেয়েকে মারধর করত। তারা দুধর্ষ প্রকৃতির লোক। তারা আমার মেয়ের নিকট ৩ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে।
টাকা না দেওয়ায় গত শনিবার এবং মঙ্গলবার মেহ গিনি গাছের ডাল দিয়ে দু’দফা পিটিয়ে রক্তাত্ব জখম করে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে। ভয়ে আমি ওই বাড়িতে মেয়েকে উদ্ধারের জন্য জাইনি। তাই ‘৯৯৯’ ফোন দিয়েছি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
এ বিষয়ে আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম মিজানুর রহমান জানান, ‘৯৯৯’ থেকে ফোন পেয়ে গুলিশাখালী গ্রামে পুলিশ পাঠিয়ে নির্যাতিত গৃহবধূ লিজা বেগমকে উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।