শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ, ১৪৩১
ফিচার ডেস্ক।।
করোনা কালে কেমন কাটছে কাজের বুয়াদের জীবন! বুয়া দেশিও ভাষায় খালা বলে সম্বোধন করতে আমরা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকি। তিন’শ থেকে শুরু করে পাঁচ’শত টাকা মজুরিতে কাজ করেন সারাবছর। কোন কোন বুয়া বেঁচে থাকার তাগিদে এবং অর্থ যোগাতে বাচ্চা সাথে নিয়ে কাজে বের হন রোজ। নিজের ঘর সামলে কাজে বেড়িয়ে পরেন রোজ সকাল সকাল। এদের মধ্যে কেউ কেউ অর্থের প্রয়োজনে ঢাকা পাড়ি জমিয়েছেন। আবার কেউ অর্থের টানাপোড়া কমাতে নিজ ইচ্ছেতে এ পেশায় যোগ দিয়েছেন।
সালেহা নামের এক কাজের বুয়া সাথে কথা হলে তিনি জানান, “গ্রাম থেকে ঢাকায় আইছি আজ আট মাস। আগে কহনও এই কাম করিনাই। গ্রাম থেকে ঢাকায় কাম করতে আইয়া প্রথম প্রথম তিন’শ টাকা মজুরিতে সারা মাস কাজ করতাম। এখন জন প্রতি পাঁচ’শ টাকার নিচে কারো বাসায় কাজ করি না। সকালে একবার রান্না করে যাই ,আবার সন্ধ্যার ইফতারের পর পর রাতের জন্য রান্না করি প্রতিদিন”
লকডাউনের মধ্যে কেমন কাজ পাচ্ছেন জানতে চাইলে আক্ষেপের সুরে তিনি জানান, “বর্তমানে তো ইনকাম নাই। অনেক কম। কোন রকম আর কি জীবনযাপন করতেছি।”
তিনি জানা, লগডাউনের মধ্যে বেশির ভাগ কাজ ছুটে গেছে। আগে যাদের কাজ করতেন তারা বেশির ভাগই ছিলেন ব্যাচেলর ও স্টুডেন্ট। গত বছর লগডাউন শুরু হলে একে একে করে সবাই বাড়ি ফিরে গেছে। স্কুল কলেজ বন্ধ তাই হাতে কাজ কাম নাই বললেই চলে চলে জানান তিনি।
আগে ব্যাচেলর বাসায় কাজ করলে ৫০/১০০ টাকা বেশি বকশিশ দিত মামারা। এহন তারা যার যার বাড়ি চলে গেছে। এহন যাদের বাসায় কাজ করি তারা অফিসে কাজ করে। তাই তারা ঢাকায় আছে এবং তাদেরই কাজ করেন সালেহা খালা। ঈদে গ্রামের বাড়ি যাবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরীবের আবার ঈদ! কি যে কন মামা! আমি বাড়ি চলে গেলে এরা খাইব কি! আর বাড়ি গেলে আমারও তো ইনকাম বন্ধ হইয়া যাইব। তাই এবারের ঈদে বাড়ি যামু না।
সালেহা আরও জানান, আগে দুই একটা ফ্যামিলি বাসা বাড়িতে কাম করতাম। লগডাউনে তাদেরও ইনকাম বন্ধ। তাই সেখান থেকেও ছুটি দিয়ে দিছে। ইনকাম না থাকলে তারাই বা চলবে কি করে! আর আমারই বা বেতন দিবে কি ভাবে! তাই আর কামে যাই না তাদের।
উল্লেখ্য, দেশে লকডাউনের কারণে কাজ না থাকায় এবারের ঈদ উদযাপন কেমন কাটবে এমন আসংখ্যা ও অনীহা মধ্যে রয়েছে দেশের নিম্নবিত্ত শ্রেণির পেশার বুয়ারা।