শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ, ১৪৩১
অনলাইন ডেস্ক।।
ঢাকার ধামরাইয়ে হাসপাতালের বিল দিতে না পেরে ৬০ হাজার টাকায় ছেলে নবজাতককে বিক্রির ঘটনায় জড়িত এক নার্সসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় বিক্রি করা নবজাতকটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে তুলে দেয়া হয়েছে। সোমবার (২৯ জুন) সকালে সাভারের রাজফুলবাড়িয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে নবজাতকটিকে উদ্ধার করে ধামরাই থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত ২৬ জুন রাতে ধামরাইয়ের সুতিপাড়া ইউনিয়নের বাটারখোলা এলাকার গুচ্ছ গ্রামের ভাড়াটিয়া মৃত বাবুল হোসেনের স্ত্রী নাজমা বেগমের প্রসব বেদনা ওঠে। তিনি স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য আছিয়া বেগমের সহযোগিতায় কালামপুর ডাউটিয়া এলাকার রাবেয়া মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। রাতে তিনি একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেন। তবে সংসারে অভাবের কারণে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করা তার পক্ষে অসাধ্য হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় তিনি ওই হাসপাতালের নার্স সাদিয়া বেগমের পরামর্শে নিজের ছেলে শিশুটিকে রোববার (২৮ জুন) সকালে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করে হাসপাতালের ১০ হাজার ৫০০ টাকা বিল পরিশোধ করেন।
এদিকে মায়ের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে নবজাতক শিশুটিকে বিক্রিতে সহায়তা করায় নার্স সাদিয়া বেগমকে আটক করে পুলিশ। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার (২৯ জুন) সকালে সাভারের রাজফুলবাড়িয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে নবজাতকটিকে উদ্ধার কা হয়। এ সময় নবজাতককে কেনার অপরাধে হেলাল উদ্দিন ও সাথী আক্তার নামে এক দম্পতিকে আটক করে পুলিশ। পরে উদ্ধার করা নবজাতকটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
নবজাতকের মা নাজমা বেগম বলেন, বিল দিতে না পারায় হাসপাতালের নার্স সাদিয়া ও তার কথিত স্বামী একই হাসপাতালের সহকারী মেডিকেল অফিসার রিয়াজুল ইসলাম এক ব্যক্তিকে মোবাইল ফোনে ডেকে আনেন। তার কাছে ৬০ হাজার টাকায় আমার নবজাতক ছেলেকে বিক্রি করে দেন।
তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী কিছুদিন আগে মারা গেছেন। আমার থাকার কোনো নিজস্ব ঘর না থাকায় আরও দুটি সন্তান নিয়ে সরকারি গুচ্ছ গ্রামে ভাড়া থাকি।
ধামরাই থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, নবজাতক বিক্রির ঘটনায় জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। নবজাতককে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি সরকারিভাবে সাহায্যের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।