মেহেন্দিগঞ্জ প্রতিনিধি।।
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় কিশোরী গৃহকর্মীকে (১৪) ধর্ষণ ও গর্ভপাত করার অভিযোগে গৃহকর্তা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা ধামাচাপা দিতে পুলিশ’র বিরুদ্ধে ভিকটিমের বাড়ি ভাংচুর ও মামলা করতে বাধ্য করার অভিযোগের গোমর ফাঁস হয়ে গেল। ভিকটিমের বাড়ি ভাংচুরের নাটক সাজায় থানার দালাল কথিত সাংবাদিক সঞ্জয় গুহ।
প্রকৃত ঘটনা এবং দোষীদের আড়াল করতে পুলিশ’র বিরুদ্ধে ভিকটিমের বাড়ি ভাংচুর করার অভিযোগ তোলা হয়। রোববার স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে স্বাক্ষাৎকারে ভিকটিমের ভাই আঃ রহিম বলেন, আমাকে দিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ঘরে হামলা ও জোড়পূর্বক মামলা নেওয়ার কথা বলিয়েছেন সাংবাদিক সঞ্জয় গুহ। ভিকটিম ও তার বাবা এবং ভাই বলেন আমরা স্ব ইচ্ছায় থানায় মামলা দায়ের করেছি। পুলিশ আমাদের বাড়িতে হামলা কিংবা ভাংচুর করেনি।
ওই মামলাটি ধামাচাপা দিতে এবং নিজেদের করা শালিস মিমাংসার বৈধতা দিতে চিহ্নিত দালাল কথিত সাংবাদিক সঞ্জয় গুহ’র নাটক’র গোমর ফাঁস করলেন ভিকটিম পরিবার। মামলার পর কথিত সাংবাদিক ও দালাল চক্র কর্তৃক শালিস মিমাংসা এবং টাকার ভাগাভাগির প্রাথমিক প্রমাণ পায় পুলিশ। এই ব্যাপারে থানা অফিসার ইনচার্জ আবিদুর রহমান বলেন অভিযুক্ত দালালদের আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রসঙ্গত, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় কিশোরী গৃহকর্মীকে (১৪) ধর্ষণ ও গর্ভপাত করার অভিযোগে গৃহকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। শনিবার কিশোরীর বাবা আক্কাস আলী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। অভিযোগ রয়েছে, এর আগে গত বৃহস্পতিবার মামলা দায়ের করতে থানায় গেলে দালাল চক্র কথিত সাংবাদিক সঞ্জয় গুহ ভিকটিমকে ফিরিয়ে নিয়ে তার নিজ আস্তানায় শালিস মিমাংসা করেন। তিন লাখ টাকার বিনিময়ে কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে আপোষ-রফা করেন। এতে ভিকটিম পরিবারকে দেড় লাখ দিয়ে বাকি দেড় লাখ টাকা নিজে হাতিয়ে নেয়। বিষয়টি থানা কর্তৃপক্ষ টের পেলে পুলিশ কিশোরীর বাবাকে উদ্ধার করার পর শনিবার দুপুরে তিনি মামলাটি দায়ের করেন। অভিযুক্ত ধর্ষক হচ্ছে- মেহেন্দিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চরহোগলা গ্রামের জুয়েল শাহ।
জানা গেছে, একই উপজেলার চরলতা গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের ওই কিশোরী ৭/৮ মাস আগে জুয়েল শাহ’র বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ নেয়। এর কিছুদিন পর প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জুয়েল শাহ কিশোরীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। কিশোরী গর্ভবতী হলে সে জুয়েল শাহ’র স্ত্রী লিয়াকে ঘটনা খুলে বললেও কোন প্রতিকার হয়নি। কিছুদিন আগে কিশোরী অসুস্থ হলে তাকে জুয়েল শাহ বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে বরিশাল নগরীতে তার এক বন্ধুর বাসায় নিয়ে এক নার্স ও আয়ার সহযোগীতায় কিশোরীর ৬ মাসের সন্তান প্রসব ঘটানো হয়। স্থানীয় সচেতন মহল বলেন দালাল একজন নামধারী সাংবাদিক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা নিচ্ছে না পুলিশ। প্রশ্ন দালাল চক্রকি আইনের ঊর্ধে।