বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ, ১৪৩১
ডাঃ মো: আলী হাসান।।
লেখাটা শুরু করছি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা দিয়ে, না হলে অনেক কিছুই এ আমলে অবিশ্বাস্য মনে হবে। আমরা যখন মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হই তখন শর্ত ছিল পাশ করার পর দুই বছর সরকারি চাকরি করতে বাধ্য থাকবো। শর্তানুযায়ী আমরা শেষ ব্যাচের আগের ব্যাচ যারা বিসিএস ছাড়াই সরকারি চাকরিতে ঢুকেছিলাম। শর্ত থাকলেও আমরা চাকরি পাচ্ছিলাম না। এ জন্য সেই সময় তুমুল আন্দোলন চলছিল, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলোতে প্রায় দুই মাস জরুরী চিকিৎসা সেবা ছাড়া অন্যসব স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা বন্ধ ছিল।
সেই সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন- সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরী আর সচিব ছিলেন যতদূর মনে করতে পরে গোলাম মোস্তফা। আন্দোলন চলছে, মিছিল মিটিং চলছে কিন্তু কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। সেই সময় পোস্টিংয়ের অপেক্ষায় ডাক্তার ছিল বারো’শ এর আশেপাশে। পোস্টিং কথাটা বললাম এই জন্য যে আমরা ছিলাম আগের ধারাবাহিকতায় ইনসার্ভিস ট্রেইনি। অর্থাৎ পাশের পর থেকে ইনসার্ভিস ট্রেইনিতে যোগদান থেকেই আমরা চাকরিতে আছি। কিন্তু ইনসার্ভিস ট্রেইনিকাল এক বৎসর পার হয়ে গেলেও নতুন করে নতুন পদে পোস্টিং হচ্ছিল না। পিছনে কারন কি ছিল আমরা জানি না, তবে কর্তৃপক্ষের একটা ভাষ্য পাওয়া যাচ্ছিল এ রকম ‘এক সাথে এত ডাক্তার পোস্টিং দেবার মত পদ খালি নাই। এই যখন অবস্থা তখন মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় খুব সিরিয়াসলি বুঝার চেষ্টা করলেন যে আসল সমস্যাটা কোথায়।’
এদিকে হাসপাতাল প্রায় অচল। বিষয়টা সেই সময় একটা জাতীয় দৈনিকে বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করা হয়েছিল, পত্রিকার নামটা এখন আর মনে নাই। কারন ঘটনাটা এখন থেকে প্রায় তিন যুগ আগের। আমি সেই পত্রিকার রিপোর্টের আলোকেই কথাগুলো লিখছি।
মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রীমহোদয়ের কাছে রিপোর্ট দেয়া হয়েছে শুন্য পদের সংখ্যা ৩৫৭। মন্ত্রী মহোদয় তখন সিভিল সার্জনদের কাছ থেকে একটা রিপোর্ট নিলেন। সেখানে শুন্য পদের সংখ্যা হলো ১৭০০ এর মত। যেদিন এই রিপোর্ট পাওয়া গেল পরের দিনই ১২০০ এর মত ডাক্তারের পোস্টিং অর্ডার হয়ে গেল। আমরা সবাই শুন্য পদেই যোগদান করতে পেরেছিলাম, কারো কোন অসুবিধা হয়নি। ক্রমশ…
পুনশ্চঃ এতক্ষণ যা বললাম সবই আমার নিজের অভিজ্ঞতা, কারো কোন দ্বিমত থাকলে সংশোধন করে দেবেন।
লেখক: (শিশু বিভাগ) এর সাবেক সহকারী অধ্যাপক, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বরিশাল।