শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১
অনলাইন ডেস্ক।।
ভোলার চরফ্যাসনের পর বাগেরহাটের মোংলায় হাঁসের কালো ডিম পাড়ার খবর পাওয়া গেছে। এই ডিম দেখতে উৎসুক জনতা প্রতিদিন উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দিনমজুর জুলফিকার গাজীর বাড়িতে ভিড় করছেন।
জানা গেছে, জুলফিকারের স্ত্রী নাজমা বেগম দরিদ্রতার কারণে তিন মাস ধরে হাঁস-মুরগি লালন-পালন করে আসছেন। এর মধ্যে খাকি ক্যাম্পবেল জাতের হাঁস দুই সপ্তাহ ধরে কালো রঙের ডিম দিচ্ছে। শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে খোপ থেকে সর্বশেষ একটি কালো ডিম সংগ্রহ করে বিকেলে ভেজে খায় পরিবারটি।
এ বিষয়ে নাজমা বেগম বলেন, তিন মাস আগে নবলোক নামের এনজিও ২৫টি খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস দেয়। সঙ্গে আরও ১০টি সাধারণ প্রজাতির হাঁস কিনে লালন-পালন শুরু করি। বর্তমানে ১০টি হাঁস ডিম দিচ্ছে। প্রতিদিন খোপ থেকে কালো ও নীল বর্ণের ৪-৫টি ডিম সংগ্রহ করছি। প্রয়োজন মিটিয়ে বিক্রিও করছি। কিন্তু হঠাৎ করে কালো ডিম দেখতে মানুষজন ভিড় করছেন। তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পবেল হাঁস বেশিরভাগ সময় নীলচে ডিম পাড়ে, সাদা হয় না বললেই চলে। ডিমের ভেতরে সব একই রকম। এ জন্য এটিকে স্বাভাবিক ঘটনা ভেবেছি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অমল কুমার সরকার জানান, হাঁসের কালো ডিম কেন হয়, সেটি তাঁর জানা নেই।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ভোলার চরফ্যাশনের জিন্নাগড় ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রাঢ়ীর বাড়ির বাসিন্দা আবদুল মতিনের খামারে পাতিহাঁস দুটি কালো রঙের ডিম পাড়ে। এরপর বিষয়টি আলোচনায় আসে। প্রাণিবিজ্ঞানীরা বলছেন, ডিমের খোলস সাধারণত তৈরি হয় ক্যালসিয়াম কার্বোনেটের মাধ্যমে। সাদা, হালকা সবুজ, নীলচে আভা ও হালকা গোলাপি রঙের ডিম সচরাচর চোখে পড়ে। হাঁসের শরীরের ভেতরে খোলস তৈরির প্রক্রিয়ায় কিছু উপাদান অনেক বেশি থাকলে ডিম কালো হতে পারে। তবে এ ধরনের হাঁসের ডিমগুলো ধীরে ধীরে সবুজ বা নীল রং থেকে সাদা রঙের হয়ে যাবে।
চরফ্যাসনের ঘটনার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও পাখি গবেষক আ ন ম আমিনুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, প্রাণিদেহের রক্তকণিকা ভেঙে বিলিভারডিন নামে একটি উপাদান বের হয়। এটা কম-বেশি হওয়ার কারণে ডিমের খোলসের রং নীলচে বা সবুজাভ হয়। সেসঙ্গে জরায়ুতে ডিমের খোলসটি পরিণত হওয়ার সময়ে তাতে গাঢ় সবুজ রঙের পিত্তরস বেশি থাকতে পারে। ওই দুটি উপাদান জরায়ুতে বেশি থাকলে তা থেকে ডিমের রং কালো হতে পারে। এই ডিমের খোলস ছাড়া ভেতরের সাদা অংশ ও কুসুম অন্য হাঁসের ডিমের মতোই। ফলে খেতে কোনো অসুবিধা নেই।