শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১
অনলাইন ডেস্ক।।
ভাইরাল হওয়ার নেশায় বাড়ির উঠানে কবর খুঁড়ে রাত যাপন! সঙ্গে নেন খাবার, পানি, বাল্ব, ভিডিও ক্যামেরা, কম্বল ও বালিশ। শুধু তা-ই নয়, গরম থেকে বাঁচতে সেই কবরের বাইরে প্লাস্টিকের মোটা পাইপের মুখে দেন বৈদ্যুতিক পাখায় সংযোগ। এতো আয়োজন শুধুমাত্র ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার জন্য।
পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন ওই ইউটিউবার জানান, কবরে ১২ ঘণ্টা তার খুব ভালোই কেটেছে। তার ইচ্ছা ছিল কবরে ২৪ ঘণ্টা কাটানো। কবরে থাকাকালীন কয়েক দফায় তার ভাইয়ের সঙ্গে ভিডিও ফোনে কথাও বলেছেন তিনি। মাটির ভেতরের পরিবেশ খুবই শীতল।
কবরে রাত যাপন করা এই ইউটিউবারের নাম মিজানুর রহমান রনি। ২৩ বছরের মিজানুর বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আমরুল ইউনিয়নের রাধানগর পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম মোকছেদ আলী।
সোমবার (২২ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে তাকে কবর থেকে উদ্ধার করে অপরাধ সংগঠন নিবারণকল্পে তাকে গ্রেফতার করা হয়। একইসঙ্গে তার আপন ভাই ২৮ বছরের আবু হাসানকেও গ্রেফতার করা হয়। এর আগে, রোববার (২১ আগস্ট) দিবাগত রাত ১১টার দিকে কবরে প্রবেশ করেন তিনি।
শাজাহানপুর থানার এসআই শামীম হোসেন জানান, রনি একজন ইউটিউবার। রাতে তাদের বাড়ির আঙিনায় পূর্ব-পশ্চিম দিক করে কবর খোঁড়েন তিনি। সেই কবরে কিছু খাবার, বাল্ব, পানি, কম্বল, বালিশ, ভিডিও ক্যামেরা ও মুঠোফোন নিয়ে প্রবেশ করেন তিনি। পরে ওপর থেকে তার ভাই আবু হাসান কবরের কাঠের দরজা লেগে দেন এবং সেই দরজার ওপরে মাটি চাপা দেন।
একইসঙ্গে দুটি পাইপ সেই কবরে ঢুকে দেওয়া হয়। কবরের ওপরে একটি পাইপের মুখে বৈদ্যুতিক পাখার সংযোগও দেন তিনি। এছাড়াও বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালান ভেতরে। পাইপ দিয়েই কররের ভেতরে দেওয়া হয় বৈদ্যুতিক সংযোগ। এছাড়া ওই পাইপ দেওয়া হয় কবরে আলো-বাতাস প্রবেশ করার জন্য। এরপরে ইউটিউবার রনির ভাই কবরের বাইরে থেকে ভিডিও করতে থাকেন। আর রনি থাকেন ভেতরে।
তিনি আরো জানান, রনির ইচ্ছা ছিল ওই কবরে ২৪ ঘণ্টা কাটানো। কিন্তু ঘটনাটি সকালে গ্রামে জানাজানি হয়। ইউটিউবে এক ভিডিও দেখে কবরে ২৪ ঘণ্টা কাটিয়ে ভাইরাল হওয়ার ইচ্ছা থেকেই এমন করেছেন তিনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কবর খুঁড়ে রনিকে উদ্ধারের পর গ্রেফতার করা হয়।
ইউটিউবার মিজানুর রহমান রনির বরাত দিয়ে তিনি জানান, কবরে রনির ভালোই সময় কাটে। কবরের পরিবেশ বেশ শীতল। সেখানে থাকাকালীন মুঠোফোন দিয়ে ভিডিওকলে তার ভাই আবু হাসানের সঙ্গে কয়েক দফা কথাও বলেছেন তিনি। ভাইরাল হওয়ার নেশায় এমন করেছেন তিনি। তাকে সঙ্গ দেন তার ভাই আবু হাসান। রনি যদি কবরে আরো সময় থাকতেন তাহলে তিনি মারাও যেতে পারতেন। এ কারণে তাকে ও তার ভাইকে অপরাধ সংগঠন নিবারণকল্পে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।