শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১
স্বাস্থ্য-চিকিৎসা।।
ফের বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের এনজিওগ্রাম ও সিটি স্ক্যান মেশিন চালু হয়েছে। এতে খুশি হয়েছে রোগীসহ তাদের স্বজনরা।
তবে শেষ পর্যন্ত কতদিন এগুলো সচল থাকবে তা নিয়ে শঙ্কার কথাও জানিযেছেন তারা। শাজেদা বেগম নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, বৃদ্ধ বাবা ও শশুরের শারিরীক অসুস্থতার কারণে গত ২/৩ বছরে বেশ কয়েকবার এ হাসপাতালে এসেছি। কিন্তু সিটি স্ক্যান মেশিন কখনো সচল পাইনি। তবে এবার শুনলাম সিটি স্ক্যান মেশিন সচল হয়েছে, তাই বেশ ভালো লাগছে। ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে কম খরচে গুনগত মানের পরীক্ষা করাতে পারবো হাসপাতাল থেকে।
তবে শঙ্কা রয়েছে এগুলো কতদিন সচল থাকবে। কারণ হাসপাতালে সিটি স্ক্যান সচল হলে সামনের ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে থাকা ডজনখানেক সিটিস্ক্যান মেশিনের ব্যবসা মুখ থুবরে পড়বে।
এদিকে শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন মেশিনগুলো সচল রাখতে দক্ষ টেকনিশিয়ান ও বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। তবে হাসপাতালের কর্মচারীদের একটি সূত্র বলছে, এ মেশিনগুলোর বর্তমান দায়িত্বে থাকা টেকনিশিয়ানসহ সংশ্লিষ্টদের হাসপাতালের সামনের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে যোগসাজেশ রয়েছে। আর এ কারণেই সেসব মেশিন যতটানা বিকল হয়, তার থেকে বেশি বিকলের ঘটনা ঘটে হাসপাতালের মেশিনগুলোর বেলায়। এক্ষেত্রে হাসপাতাল প্রশাসনের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
এদিকে টানা ৪ বছর পর এনজিওগ্রাম মেশিন ও আড়াই বছর পর সিটি স্ক্যান মেশিন সচল হওয়ায় কর্মব্যাস্ততা ফিরেছে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এনজিওগ্রাম ও সিটি স্ক্যান বিভাগে। যেখানে এখন একের পর এক রোগীদের সেবা দিচ্ছে সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর এনজিওগ্রাম মেশিনটি নষ্ট হয়। আর ২০২০ সালের ২০ জুন নষ্ট হয় সিটি স্ক্যান মেশিন। দীর্ঘদিন মেশিন দুটি অচল থাকায় বিভাগের প্রায় অর্ধলক্ষ অসুস্থ মানুষের সেবা থেকে বঞ্চিত ছিলো। তবে নতুন করে চালু হওয়ার পর এরইমধ্যে ২ জন রোগীর এনজিওগ্রাম করা সম্পন্ন হয়েছে, ভবিষ্যতে রিং পড়ানোর চিন্তা ভাবনাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন এ বিভাগের দায়িত্বরতরা। পাশাপাশি সিটি স্ক্যান বিভাগে প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ে সেবা নিচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ জন রোগী, তবে ভবিষ্যতে হাসপাতালে সার্বক্ষণিক সিটি স্ক্যান সেবা চালু রাখার চিন্তাভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বে থাকা টেকনিশায়নরা।
হাসপাতালেল কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এম সালেহ উদ্দিন বলেন, মেশিন সচল হওয়ায় সেবা দিতে পেরে সবাই খুশি। তবে এখন দক্ষ টেকনিশিয়ান ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স নিয়োগ জরুরি হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় মেশিন দুটি সচল করা হয়েছে জানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, এখন হৃদরোগে আক্রান্ত আর কোনো রোগীকে এনজিওগ্রাম বা এনিজওপ্লাস্টি পরীক্ষার জন্য রাজধানীতে যেতে হবে না। আর মেশিন সচল হওয়ায় সিটি স্ক্যানের সুবিধা সল্পমূল্যে হাসপাতাল থেকে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।