বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ, ১৪৩১
জাকিরুল আহসান।।
বরিশাল বিভাগেও ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। গত ৫ জুলাই রোববার পর্যন্ত বিভাগের ৬ জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ২৯৮ জন এবং মারা গেছেন ৭৩ জন। মৃত্যুর তালিকায় আছেন রাহাত আনোয়ার হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. আনোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন স্বনামধন্য চিকৎসকও। বরিশালে করোনা ছড়িয়ে পড়া, আক্রান্তদের সুস্থ করে তোলা, সমসাময়িক এ প্রসঙ্গ নিয়ে রূপালী বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের শিশু বিভাগের সাবেক সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আলী হাসান।
তিনি বলেন, আসলেই বিষয়টি নিয়ে ভয়ের যথেষ্ট কারণ আছে। দিনে দিনে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে ঘরে ঘরে। যারা চিকিৎসা করেন সেই চিকিৎসকরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের সঙ্গে যে স্বাস্থ্যকর্মীরা থাকেন তারাও আক্রান্ত হচ্ছেন। আবার আক্রান্ত হয়ে এরা যখন ঘরে ফিরছেন তখন ছড়াচ্ছে তাদের পরিবারে।
এই চিকিৎসক বলেন, ডাক্তার কিংবা স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসা করতে গিয়ে। কারণ অনেক রোগী উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন কিন্তু তিনি তথ্য গোপন করছেন। আবার সাধারণ মানুষও আক্রান্ত হচ্ছেন। তারা হয়তো অন্য রোগ নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছেন। সেখান থেকে তারা সংক্রমিত হচ্ছেন। আবার হাসপাতালে রোগীর স্বজনরা যাচ্ছেন তারাও আক্রান্ত হচ্ছেন সংস্পর্শে থেকে। তারা বাড়িতে ফিরছেন সেখানেও আক্রান্ত হচ্ছে তাদের সংস্পর্শে আসা লোকজন। এভাবে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে করোনা, যা ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে।
শিশুদের কি করোনা সংক্রমন ঝুঁকি কম এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি রূপালী বার্তাকে বলেন, না মোটেও না, শিশুদের করোনা ঝুঁকি কম নয়, বলতে গেলে শিশুদের ঝুঁকি আরো বেশি। কারণ শিশুদের ভাইরাস প্রতিরোধী ক্ষমতা অতটা হয়ে ওঠে না। শিশু, যুবক, নারী বা পুরুষ নয়, এটা হলো মুভমেন্টের ওপর। পরিসংখ্যানে দেখা যায় আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগ পুরুষ। এর কারণ হলো পুরুষ লোক বাইরে বেশি বের হন, তাদের সঙ্গে বেশি মানুষের সংস্পর্শ ঘটে।
ডা. মো. আলী হাসান বলেন, অন্যান্য রোগে আক্রান্তরা ঝুঁকিতে বেশি থাকেন। যার ভেতরে যত বেশি জীবানুর সংক্রামন থাকবে স্বাভাবিকভাবেই তিনি ঝুঁকিতে থাকবেন। এজন্য দেখা যায় যারা ডায়াবেটিস, কিডনী ও অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত তাদের অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হয়।
কীভাবে এর সংক্রমন থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে- এ প্রসঙ্গে শেবাচিম-এর সাবেক এই চিকিৎসক বলেন, উপায় একটাই সেটা হচ্ছে যত কম মুভমেন্ট করা যায়। জরুরী প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হলেও যথেষ্ট সতর্ক থাকা। মুখে মাস্ক ব্যবহার করা, হাত বার বার ধুয়ে রাখা। অর্থাৎ ভাইরাস প্রবেশের পথগুলো আটকে রাখা।
অনেকেরই উপসর্গ আছে, কিন্তু বাসায় বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন -পদ্ধতিটা কতটা সঠিক? এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, নিঃসন্দেহে এটা ভালো দিক। কারণ উপসর্গ থাকলেই যে আপনি করোনা রোগী তা কিন্তু নয়। আবহাওয়া পরিবর্তন বা অন্য কোন কারণেও আপনার জ্বর কাশি হতে পারে। সেক্ষেত্রে বাসায় বসে চিকিৎসা নেয়ার নির্দেশনা স্বাস্থ অধিদপ্তরের দেয়া আছে। যদি করোনা পজেটিভ আসে তাতেও বাসায় চিকিৎসা নেয়া যাবে। যদি আপনার উপসর্গগুলো চলে যায়, সুস্থ হয়ে যান তাহলে সমস্যা নেই। তবে স্বাসকষ্ট হলে অবশ্যই হাসপাতালে যাওয়া উচিত-যোগ করেন ডা. মো. আলী হাসান।