বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ, ১৪৩১
অনলাইন ডেস্ক।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ভালোবেসে বিয়ের ৫ মাসের মাথায় কুহিনুর আক্তার নিতু নামের এক গৃহবধূকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে উপজেলার চরচারতলা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে স্বামী মো. জুয়েল পলাতক রয়েছেন।
নিহত কুহিনুর আক্তার নিতু একই এলাকার মো. আবুল হোসেন মিয়ার মেয়ে। তার স্বামী জুয়েল ওই এলাকার মো. আবুছান মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিতু ও জুয়েল দুজনেরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে। পাশাপাশি বাড়ি হওয়ার সুবাদে দুজনের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক ছিল। কিন্তু জুয়েল মাদকাসক্ত হওয়ায় নিতুর পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি। পরে উভয়েই পরিবারের পছন্দ মতো আলাদা জায়গায় বিয়ে করেন। কিন্ত বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে নিতুর সংসার ভেঙ্গে যায়। এদিকে দুই সন্তানের বাবা হওয়ার পর জুয়েলের সংসারও ভেঙ্গে যায়। এরপর দুজনের মধ্যে আবারও সর্ম্পক তৈরি হয়।পরবর্তী সময়ে তাদের চাপে পড়ে দুই পরিবার পাঁচ মাস আগে দুজনের বিয়ে দেয়।
স্থানীয়রা জানায়, বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে জুয়েলের প্রতিবেশীরা তার ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকানো ও দরজায় রক্ত দেখতে পান। পরে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে চাদর দিয়ে ঢাকা অবস্থায় নিতুর মরদেহ দেখতে পেয়ে তারা পুলিশে খবর দেন।
পুলিশ জানায়, নিতুকে বটি-দা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতারি কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। বটি-দায়ের আঘাতে তার নাড়ি-ভুড়ি বের হয়ে গেছে। শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। রাতেই লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ আরও জানায়, ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত বটি-দা উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই জুয়েল পালিয়ে যান। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জুয়েলের বাবা আবুছান, ছোট ভাই কামরুল, মা রহিমা বেগম ও জুয়েলের অপর দুই ভাইয়ের বউকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে।
নিহত নিতুর বাবা মো. আবুল হোসেন জানান, ২ মাস আগে জুয়েল ব্যবসার জন্য ২ লাখ টাকা চেয়েছিল।
জুয়েলের বাবা আবুছান জানায়, তার ছেলে মাদকাসক্ত ছিল। কখন হত্যার ঘটনা ঘটেছে তা তিনি জানেন না। প্রতিবেশীর ডাকে তিনি রাত সাড়ে ১২টার দিকে বের হন এবং জুয়েলের ঘরে গিয়ে পুত্রবধূর লাশ দেখতে পান।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক শ্রীবাস চন্দ্র দাস বলেন, খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার ও সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের শরীরে অসংখ্য আঘাত রয়েছে। সেই সঙ্গে গলা এবং ঘাড়ও কাটা অবস্থায় পাওয়া গেছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।