শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১
গোলাম কিবরিয়া, বরগুনা।।
বরগুনার বেতাগীতে নৌকা মার্কার প্রার্থীর কর্মীদের দ্বারা স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ কর্মীদের নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খাবার সহ তিনটি অটোরিকশা নিয়ে যায় নৌকার কর্মী- সমর্থকরা। স্বতন্ত্র প্রার্থী পরিবারের স্বজনরা স্বজন এবং তার কর্মীসমর্থকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এর আগেও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় থেকে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
জানা যায়, বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বৃহস্পতিবার (১৭জুন) সকালে উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের মোল্লারহাট বাজার সংলগ্ন চেয়ারম্যান বাড়ির চাল,ডাল, কাচাবাজার নিয়ে আসা তিনটি অটোগাড়ি আটকিয়ে রাখাসহ কর্মীদের বাড়ির ভিতরে অবরুদ্ধ করে রাখে নৌকা মার্কার সমার্থকরা। তাদের ভয়ে ওই বাড়ির নারী-পুরুষ শিশুরা ভয়ে তটস্থ। প্রত্যেকের চোখে মুখে হতাশার ছাপ। যেকোনো সময় নৌকার কর্মী সমর্থকদের হামলায় হাত হতে এমন আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। স্বতন্ত্র প্রার্থী অভিযোগ করেছেন ইউনিয়নের কাচারি বাড়ি দুইটি দোকানে এবং স্থানীয় রিপন হাওলাদারের বাড়িতে নৌকার কর্মী সমর্থকরা দেশীও অস্ত্র মজুদ করেছেন। এলাকায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। তাদের বাধার মুখে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা তার বাড়িতে প্রবেশ করতে পারছেন না। কোনো কর্মী-সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাড়িতে প্রবেশ করলে তাকে ধরে নিয়ে মারধর করে নৌকার কর্মীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মোকামিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো: জালাল গাজীর ভাতিজা মো: রাজিব, এবং মোকামিয়া ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াদের নেতৃত্বে সাবেক ইউপি সদস্য আল-আমিন, পুতুল ও বাদল মিত্রসহ আরও অনেকে বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম সুজন মল্লিকের বাড়ির সামনে অবস্থান করছে। একই এলাকার খানের হাট বাজারে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা চেকপোস্ট বসিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মারধর এবং বাধা দিচ্ছেন। এতে নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা।
একই এলাকার মো: বারেক মল্লিক জানান, তারা বাড়ির বাহিরে যেতে পারছেননা এবং গবাদি পশুপাখি মাঠে চরাতে পারছেননা। আমাদের বাড়ি থেকে বের হতে দিচ্ছে না। মধ্যযুগের বর্বরতা চলতেছে আমাদের ইউনিয়নে। দিন রাত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাড়িতে অবরুদ্ধ থাকতে হয়।
মাহবুব আলমের চাচা সাবেক ব্যাংকার মো: সোহরাফ হোসেন (৬০) নৌকা মার্কার প্রার্থী ভাতিজা মো: রাজিব আমাদের বাড়ির সামনে এসে শাসিয়ে গেছেন আমরা যাতে ঘর থেকে বের না হই। তারা বলে গেছেন তারা সুজন মল্লিকে খুন করে মাথা নিয়ে ফুটবল খেলবেন। সুজন এক বাপের এক ছেলে তাকে হত্যা করার জন্য তারা উঠে পড়ে লেগেছে। আমরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি।
সুজন মল্লিকের বৃদ্ধ মা কহিনুর বেগম(৬৬) বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার ছেলের জীবনটাকে ভিক্ষা চাই। সেই পারে আমার ছেলেকে নৌকার প্রার্থীর হাত থেকে বাঁচাতে পারেন। এদেশে নির্বাচন করাটা কি অপরাধ।
মাহবুব আলম এর সমর্থক আল আমিন (৪০) বলেন চেয়ারম্যান বাড়ির পশ্চিম পাশে কাচারিবাড়ি বাদল মিত্রর দোকান একটি দেশিয় অস্র রাখার গোডাউন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা প্রসাশনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আমাদের জীবনের নিরাপত্তা চাচ্ছি।
এ ব্যাপারে সতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহবুবুল আলম সুজন মল্লিক বলেন, আমি জীবননাশের মধ্যে আছি এবং আমি বাড়ি যাওয়ার পথে আমার গাড়ীকে ধাওয়া করেন যুবলীগ সভাপতি লিটন তাই বর্তমানে থানায় অবস্থান করছি। তিনি আরও বলেন এরকম পরিবেশ থাকলে নির্বাচন করা সম্ভব না। তারা হুমকি দিয়েছে আমার বাচ্চা আমার সন্তানদের তুলে নিবে। এমতাবস্থায় আমি আমার পরিবার এবং আমার সর্মথকরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। আমি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরীর জন্য প্রশাসনের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। নির্বাচনী মাঠে সমানভাবে সমঅধিকার যাচ্ছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে নৌকা মার্কার প্রার্থী মো: জালাল গাজী মুঠোফোনে কল দিলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে থানার অফিসার ইন চার্জ কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, আমাদের সার্বক্ষণিক একটি টিম ওখানে কাজ করছে। আমাদের পুলিশ প্রশাসন তৎপর রয়েছে।