সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
ভূঁইয়া কামাল মুলাদী (বরিশাল)।।
বরিশালের মুলাদী পৌরসভার প্রাণ কেন্দ্রে ঢালী বাড়ীতে গড়ে উঠেছে দৃষ্টনন্দন বিভিন্ন প্রজাতির ফলফলাদী, ঔষধী ও বনজি গাছের বাগান। বাগানটি সবুজ গাছ আর সবুজ ফলের সমারোহ।
শখের বশবর্তী হয়ে বাগান করা হয়। তেমনি শখের বশবর্তী হয়ে বরিশালের মুলাদী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা সিনিয়র শিক্ষক (আরবী) হাফেজ মাওঃ মুফতি রফিকুল ইসলাম বৃক্ষ প্রেমিক বাগান করে আম, জাম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, লাল জামরুল, পেঁপে, চায়না কমলা, বাড়ি ফোর আম, ছবেদা থাই গোল, বাউকুল, কাঠ বাদাম, লাল পেয়ারা, আতাফল গাছ, করমজা, গোলাপ, জবা ও বেলিফুলসহ প্রায় দুইশত ফল ফুলের গাছ লাগিয়ে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। ফল গাছে ফল ধরেছে আর ফুল গাছে ফুল ফোটেছে। সবার দৃষ্টি পড়েছে গাছভরা কাঁঠাল, রঙিন জামরুল গাছের দিকে। হালকা সবুজ রঙের মিষ্টি ফল। লাল রঙের জামরুলও পাওয়া যায়। গাছটির ডাল-পালায় ভরে রয়েছে থোকায় থোকায় রঙিন জামরুলে। ফলের খোসা নেই, তার বদলে থাকে স্বচ্ছ মোমের মতো আবরণ। জামরুল পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ফল। এতে আছে প্রোটিন, কোর্বোহাইড্রেট, খাদ্যআঁশ, ফ্যাট, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস ও আয়রণ।
অপর দিকে কাঠাল গাছটির গোড়া থেকে মাথা পর্যন্ত রয়েছে রসালো ফলে ভরপুর। কাঠালের ক্যালসিয়াম দেহের হাড়, দাঁতের পুষ্টি জোগায়, জিঙ্ক শরীরের ইনসুলিন হরমোনের সরবরাহ নিশ্চিত করে। কাঁঠালের বিচিতে রয়েছে উচ্চতর প্রোটিন। গাছগুলো ফলে ফলে মুখরিত করেছে চারিদিকে পরিবেশ। একদিকে বাগানে গাছের বৃদ্ধি এবং ফুল দেখতে ভালো লাগে। এটি একটি খালি জমিকে গাছপালা এবং ফুলে ভরা বাগানে রূপান্তরিত করার ক্ষেত্রে অপরিসীম তৃপ্তি দেয়। আপনাকে শান্তি দেওয়ার পাশাপাশি, গাছপালা আপনার চারপাশকে আরও পরিষ্কার এবং সবুজ করতে সাহায্য করে। এটি আপনার জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আপনার উদ্ভিদের যত্ন নেওয়াও একটি ভাল ব্যায়াম।
এতে করে একদিকে টাটকা ও নিরাপদ খাবারের সংস্থান করে, অবসরেরও খোরাক যোগায়। স্বাস্থ্য সচেতনতা ও নিরাপদ ফল সবজি প্রাপ্তি সুবিধা নিশ্চিত করণে অনেকেই বাগান তৈরির অনুপ্রেরণা পাচ্ছে। বয়স্ক নর-নারী অবসর বিনোদনের প্রয়োজনে বাগান সৃষ্টিতে অনেকে আগ্রহী হয়। অনেক বৃক্ষ প্রেমিক পরিকল্পিতভাবে নিজ হাতে বাগান করে সৃষ্টির আনন্দ ও গাছপালার প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন।
বৃক্ষ প্রেমিক মাওঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি মুলাদী উপজেলার মানুষের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করার জন্য বিভিন্ন প্রজাতির ফল, ফুল ও শাক-সবজির বাগান করেছি। যাদের জায়গা খালি পড়ে আছে তারা বিভিন্ন প্রজাতির ফল, ফুলের গাছ, শাকসব্জি লাগাতে পারে ও বিভিন্ন প্রজাতির মুরগি পালন করতে পারে। একটা সুন্দর বাগান দিতে পারে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও সারা বছর ধরে পরিবারের চাহিদামতো নিরাপদ ফল-সবজি। আমি শিক্ষকতার পাশাপাশি অবসর সময়ে বাগানের সার্বক্ষণিক পরিচর্যা করে থাকি। যাদের তেমন জায়গা নেই তারও পারেন ছাদ বাগান করতে।
যারা অবসরে সময় কাটান তাদের অবসর সময়টুকু আনন্দেই কাঁটিয়ে দিতে পারবেন আপনার নিজের বাগানে। বাগান করতে হলে দরকার হয় বিশেষ পরিচর্চার। ঠিকমতো গাছের যত্ন নিলে আপনার ছোট্ট বাগানটিও ভরে উঠবে নানা ফল আর ফুলের সমারোহে।
ফল আর ফুল শুধু তার রূপ দিয়ে মুগ্ধ করে না, সেই সাথে আমাদের দেয় অনাবিল মানসিক প্রশান্তি। ফল ও ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ হয়তো পাওয়া যাবে না কোথাও। যাদের মনের কোনায় সুপ্ত বাসনা আছে, তারা ইচ্ছে করলে খালি জায়গায় বানিয়ে নিতে পারেন নিজের ছোট্ট এক টুকরো বাগান।