বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ, ১৪৩১
আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি।।
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় সরকারী নির্দেশকে উপেক্ষা করে পরীক্ষা নিচ্ছেন একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এ বিষয়ে শিক্ষা অফিস ও বিদ্যালয়ের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। তবে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যেই পরীক্ষার আয়োজন করছে উপজেলার রাজিহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সচেতন মহল ও এলাকাবাসী মনে করছেন এতে করোনা সংক্রমনের ঝুকি বেড়েই যাচ্ছে। সারা দেশের ন্যায় আগৈলঝাড়ার সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস চালু এবং সকল স্কুল বন্ধ থাকলেও উপজেলার রাজিহার মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারি নির্দেশকে উপেক্ষা করে ৩ ঘন্টার পরীক্ষা ২৪ ঘন্টায় নিচ্ছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রাজিহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হরবিলাশ বাড়ৈ জানান, উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায় শিক্ষকদের সভায় জানানো হয় যে, প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মুল্যায়ন পরীক্ষা নিয়ে ফলাফল ১০অক্টোবরের মধ্যে উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেওয়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে রাজিহার বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটি তিনটি সভা করে পরীক্ষার নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। সেই কারনে আমরা রাজিহার মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের তৈরী করা প্রশ্নে গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষায় গতকাল বৃহষ্পতিবার ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেনীর সাধারণ বিজ্ঞান ও নবম, দশম শ্রেনীর সাধারণ বিজ্ঞান, হিসাব বিজ্ঞান ও ভুগোল প্রাক বাছনিক স্ব-গৃহ মুল্যায়ন পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহণ করেছে।
তিনি আরো জানান, রাজিহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেনীতে ৬২জন, সপ্তম শ্রেনীতে ৬০জন, অষ্টম শ্রেনীতে ৪৫জন, নবম শ্রেনীতে ৬৫জন ও দশম শ্রেনীতে ৫৪জন শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করছেন। এই পরীক্ষার জন্য বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মতে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে পরিক্ষার ফি বাবদ ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেনী থেকে ২০০ টাকা, অষ্টম শ্রেনী ২৫০ টাকা, নবম এবং দশম শ্রেনী থেকে ৩০০ টাকা করে পরিক্ষার ফি নিয়ে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভর্তি ফি বাবদ ২৫০ টাকা করে নেওয়া হয়।
এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা মনে করেন বানিজ্যিক চিন্তা ভাবনা থেকে প্রবেশপত্রের নামে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ টাকা আদায় করছেন। এব্যাপারে রাজিহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উজ্জল কুমার মন্ডল জানান, শিক্ষার্থীদের ভালোর জন্য এই মুল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়ার হয়েছে। তিনি টাকা নেওয়ার ব্যাপারে বলেন, বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ বিল, ওয়াইফাই বিল ও কর্মচারী বেতন পরিশোধের জন্য টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মহাদেব বসু জানান, ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে এই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সুলীল কুমার বাড়ৈ বলেন, উপজেলা শিক্ষক সমিতি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে কোন সিদ্বান্ত গ্রহন করা হয়নি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.নজরুল ইসলাম বলেন, সভায় পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে শিক্ষকেদের মধ্যে দ্বিমত থাকলে উর্ধ্বতন কর্মকতাদের নির্দেশে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্বান্ত বাতিল করা হয়েছে। এরপরেও কোন বিদ্যালয় পরীক্ষ নিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এব্যাপারে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস বলেন, সরকারের পরীক্ষা নেয়ার এমন কোন নির্দেশনা নেই। সেখানে কোন রকম পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত সরকার তো দেয়ই নি বরং জেএসসি, জেডিসি’র শিক্ষার্থীদের স্ব-স্ব স্কুলের শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের মেধা চাচাই করে পরবর্তি ক্লাশে উত্তীর্ন করার কথা বলা হয়েছে। এই নিয়মের বাইরে কারো যাবার কোন সুযোগ নেই। অভিণব পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা ¯্রফে টাকা কামানোর ধান্ধা, আর কিছুই নয়। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান।