শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
রূপালী ডেস্ক।।
ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ নয়, ইসলামই স্বাধীনতার মূল ভিত্তি ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। তিনি বলেন, রক্ত সাগর পাড়ি দিয়ে যে বাংলাদেশ আমরা স্বাধীন করেছি, সেই স্বাধীনতা আজও স্বপ্নই রয়ে গেলো।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরের ফজলুল হক অ্যাভিনিউতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল জেলা ও মহানগর কর্তৃক আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।
বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে উপনীত হলেও সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা বিশ্বাস করি, স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ খুঁজে পেতে রাষ্ট্রক্ষমতায় ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। যারা মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের মিছে বিরোধের ফেনা তুলছেন- তাদের জানা উচিত, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ নয়, ইসলামই ছিল একাত্তরে স্বাধীনতার মূল ভিত্তি।
তিনি আরও বলেন, এদেশের ৯২ ভাগ মুসলমানের ধর্ম ইসলামকে মুক্তিযুদ্ধের বিপরীতে দাঁড় করিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা করছে একদল ভূঁইফোড় জনগোষ্ঠী। বলা হয়, এ দেশের আলেম সমাজ এবং মুসলমানরা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা পুরোপুরি উল্টো। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মসূত্রে একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান হওয়ায় তিনি মূলকে ধারণ করে প্রত্যেকটি বক্তব্য-বিবৃতিতে ইসলামের অবস্থান জানান দিয়েছেন। ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘এ দেশের মানুষকে মুক্ত করেই ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। ’ তার সে ঐতিহাসিক ‘ইনশাআল্লাহ’ ধ্বনিতে উজ্জীবিত হয়ে এ দেশের মুসলমানরা স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। দীর্ঘ নয় মাস সংগ্রাম করে এ ভূখণ্ডকে স্বাধীন করেছে। সেই সংগ্রামী মুসলমানদের বাদ দিয়ে এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস কল্পনাও করা যায় না।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে মুসলমানদের অবস্থান কী ছিল, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা তা ভালো করেই জানেন। নতুন করে সেটা প্রমাণ করতে বক্তব্য বিবৃতি জরুরি নয়। তবে যারা ইসলামকে বিকৃত করার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজাকারদের পরিচয় তুলে ধরতে ইসলামের সিম্বলগুলো ব্যবহার করেন, তাদের একটি বার্তা দিতে চাই, আপনারা সতর্ক হোন। নিজেদের রাজাকার তকমা ঢেকে রাখতে ইসলামকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করবেন না, এর ফলাফল কখনো শুভ হবে না। একই সাথে আমি বাংলাদেশ সরকারকে বলবো, যারা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন গল্প-সিনেমা-নাটক এবং তথ্যচিত্রে রাজাকারদের পরিচয় তুলে ধরতে ইসলামী সিম্বল ব্যবহার করে সেসব নির্মাতাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
বরিশাল মহানগর সেক্রেটারী মাওলানা জাকারিয়া হামিদী এবং জেলা সেক্রেটারি উপাধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজুল ইসলামের যৌথ সঞ্চালনায় র্যালি পূর্ব সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় ছাত্র যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতি সৈয়দ এছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের, কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিন, বরিশাল সিটি নির্বাচনে হাতপাখার মেয়রপ্রার্থী হাফেজ মাও. ওবায়দুর রহমান মাহবুব, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মাওলানা সৈয়দ নাছির আহমাদ কাওছার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য নওমুসলিম ডা. সিরাজুল ইসলাম সিরাজী, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রচার ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক কে এম শরীয়াতুল্লাহ, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন মহানগর সভাপতি ও চাঁদপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আমানুল্লাহ আমান প্রমুখ।
এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে মুসলমানদের অবদান এবং চরমোনাই মাদরাসার অবস্থান তুলে ধরে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন দুলাল দাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহীদ গাজী, মো. আ. হালিম মজুমদার প্রমুখ।