শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১
এইচ,এম, হুমায়ুন কবির, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)।।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় কুষকদের আমন ক্ষেত সোনালী ধান বাতাসে দুলছে গ্রামীণ জনপদ। হালকা বাতাসে বিস্তির্ন মাঠ জুড়ে কৃষকের স্বপ্নের সোনালী ধানের শীষ দোলা খাচ্ছে। সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে মৌ মৌ গন্ধ। অনেক ক্ষেতের ধানের শীষ ইতিমধ্যে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে। ধীরে ধীরে সোনালী হয়ে উঠছে। ধান কাটা, মাড়াই নতুন ধান ঘরে তোলার মহোৎসব। তাই প্রতিটি কৃষক পরিবারের কৃষকদের চোখে মুখে লেগে আছে সোনালী স্বপ্ন পূরনের ছাপ। কিন্তু এর মধ্যে কুষকদের কখন কেটে নেয় লাঠিয়ালরা তাদের স্বপ্নের সোনালী ধান। এ আশঙ্কায় শংকিত হয়ে পড়ছে প্রান্তিক কৃষকেরা। ইতো মধ্যেই কৃষকেরা রাত জেগে সোনালী ধানক্ষেত পাহাড়া দিতে শুরু করেছে।
কলাপাড়া কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ১২টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা নিয়ে এ উপজেলা গঠিত। এর আয়তন ৪৯২.১২২ বর্গ কিলোমিটার। ৩৫৫০০ জন কৃষক পরিবার রয়েছে। এ বছর ৩৩৭২৮ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছে কৃষকরা। এর মধ্যে ২৫০১০ হেক্টর জমিতে উফশি ও ৮৭১৮ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের আমন ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ২৪৭ টি গ্রামে এখন মাঠের পর মাঠ জুড়ে সোনালী কাঁচা-পাকা ধানের ফসলি ক্ষেত যেন দিগন্ত ছুঁয়ে গেছে। কৃষকের ঘরে ঘরে শুরু হবে ধান তোলার পালা। তাই ধান কাটার জন্য নতুন কাস্তে তৈরী করতে দিয়েছে অনেকে। কেউ আবার পুরাতন কাস্তে মেরামত করাচ্ছে কামারবাড়িতে। কেউ কেউ নতুন ধান উঠানে রাখার জন্য বাড়ির আঙ্গিনা সুন্দর ভাবে পারিস্কার পরিচ্ছন্ন করছেন। এজনপদে কৃষকের যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। তবে ফরিয়া বা মধ্যস্বত্বভোগীদের আনাগোনা আর তৎপরতায় ফসলের কাঙ্খিত মূল্য পাওয়া নিয়ে কৃষকদের মধ্যে রয়েছে শঙ্কা।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, ক্ষেতের ধান পাকতে শুরু করেছে। করোনার কারণে ধান কাটার জন্য দৈনিক ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে তাদের। এখন আবহাওয়া ও বাজারে ধানের দাম ভালো থাকেলেই পুষিয়ে যাবে এমনটাই বলেছেন কৃষকরা।
বালীয়াতলী ইউনিয়নের কৃষক মো.নাসির বলেন, অতি বৃষ্টির করনে এ বছর চাষাবাদে কিছুটা বিঘœ হয়েছে। তিনি প্রায় তিন হেক্টর জমি জমিতে আমন ধান চাষ করেছে। এতে তিনশ মন ধান পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছে।
ধুলাসার ইউনিয়নের কৃষক মো. ইউনুছ বলেন, সে প্রায় দুইশ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছে। এখন ক্ষেতের ধান পাকা শুরু করেছে। সার-ঔষধ প্রয়োগ ও ক্ষেতের নিয়মিত পরিচর্যা করে এ পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এম আর এম সাইফুল্লাহ বলেন, কলাপাড়ায় কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে এ উপজেলায় কৃষকদের মাঝে ১০টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। এটি দিয়ে ক্ষেতের ধান খুব অল্প সময়ে একই সাথে ধান কাটতে ও মাড়াই করা করতে পারবে কৃষকরা। এছাড়া উচ্চফলনশীন জাতের ধানের বীজ দেয় হয়েছে। আর মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের নিবিড় তত্বাবধানে রেখেছে উপ-সহকারী কর্মকর্তারা। এর ফলে আমন ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে আবহাওয়া অনুকলে থাকলে কৃষকরা কাঙ্খিত ফসল সুন্দর ভাবে কাটতে পারবে বলে তিনি জানিয়েছেন।