রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
ক্লান্ত
।। এ কে এম শামীম আহমেদ।।
আমি আজ বড্ড ক্লান্ত…
জীবনের কথা বলে প্রেমের কথা বলে মানুষের কথা বলে
মানুষের দ্বারে দ্বারে কত ঘুরেছি বিশুদ্ধ চিন্তাকে করতে চেয়েছি জাগ্রত।
ঘুমান্ত বিবেকের বুকে মৃদু স্পর্শে ছুঁয়েছি বহুবার জেগে ওঠার আহবানে
কোথাও পাইনি কোন সারা…আমি আহত পাখির মত ডানা ভেঙ্গে ঘরে ফিরেছি।
সত্যি আমি খুব ক্লান্ত…
যখন দেখি রমনীদের চোখে চেয়ে অনেক পাপ জমা করে পুরুষ তাঁর নিষ্পাপ চোখে
কত কোমল হৃদয়… পাথরের মত শক্ত প্রাণহীন হয়ে যায় অবিশ্বাসের বিষ খেয়ে
মুখোশের আড়ালে অভিনয় করে মানুষ কত নিষ্পাপ আবেগের সাথে
কত অনুভূতি বশে এনে বিধ্বংস করে দেয়…
গাঢ় অন্ধকারে বন্দি হয়ে আত্মসমর্পণ করে কত কোটি শুক্রাণু কন্ডমের ভিতর
রাস্তার পাড়ে ঝোঁপ জঙ্গলে পুরানো কাপড় মুড়িয়ে জীবন্ত মানব সন্তানকে করে হত্যা
আজন্মকালের পাপ চিরতরে মুছে দিতে জীবন্ত মাংসের টুকরো তুলে দেয় কুকুরের মুখে।
বিশ্বাস কর এসব দেখে আমি খুব ক্লান্ত…
এই শহরের জনাকীর্ণ কোলাহল মানুষকে দিয়েছে ইট পাথরের মত শক্ত দানবীয়তা
চোখ কান আর হাতে বেঁধে দিয়েছে মোটা কালো কাপড়
মানুষের চোখ দেখেনা প্রচন্ড শীতে খালি গায়ে ছুটে চলা কিশোরের মুখ।
দেখনা অর্ধ নগ্ন কিশোরীর লজ্জা আবরণী বস্ত বন্দি জীবন
মানুষের হাত পারে না বাঁচাতে পাশের ফ্লাটের নিষ্পাপ দুধের শিশুটির জ্বলসে যাওয়া শরীর
চোখের সামনে পুড়ে শেষ হয়ে যায় কতগুলো কোমল মুখ
মানুষের কান শুনতে পায়না নির্জন নগরীর রাস্তায় বিপদে পড়া কোন মানুষের চিৎকার।
একটু প্রশান্তি চাই…
ইচ্ছে করে সব ছেড়ে দিয়ে ছুটে যাই অজানা গহীন গন্তব্যে
যেখানে জীবন শুনবে শুধু জীবনের কথা
যেখানে সদ্য নবজাতক জীবন দিয়ে করবেনা কারো পাপমোচন
মানুষের কান্না দেখে ভিজে যাবে মানুষের নয়ন
প্রশান্তির নিশ্বাস নেবে মানুষ ভয় ডরহীন জীবনোচ্ছ্বাসে।
কেউ কি আছে আমায় মুক্তি দেবে অভিশপ্ত এই ক্লান্তি থেকে
জীবনকে ভালোবেসে বড্ড ক্লান্ত…এভাবে আর বাঁচতে চাই না
জীবনের সমস্ত হিসেব চুকিয়ে আজ আমি করি মাথানত
একটু ছুটি চাই ছুটে যেতে….
স্বার্থহীন কোন এক বন্দরে ভালোবাসার ফেরিওয়ালা হয়ে।