বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ, ১৪৩১
হারুন অর রশিদ, গলাচিপা (পটুয়াখালী)।।
গলাচিপা উপজেলায় হঠাৎ করে ডায়রিয়ার প্রকোপ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক-সেবিকাদের। ডায়রিয়া আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও নারীর সংখ্যাই বেশি। উপজেলা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৪৫ জন রোগী ভর্তি হচ্ছে। এরপরে হাসপাতালে চলছে তীব্র পানি সঙ্কট। যার কারণে ভোগান্তির মাত্রা আরেক ধাপ বেড়েছে।
এদিকে জেলার সাগরপাড়ের আরেক উপজেলা রাঙ্গাবালীতে এখনও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ফলে রাঙ্গাবালী উপজেলার মানুষের একমাত্র ভরসা গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দুই উপজেলার একটি মাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হওয়ায় এমনিতেই ভিড় লেগেই থাকে। তার ওপরে গত কয়েকদিনে বেড়েছে ডায়রিয়ার ব্যাপক প্রকোপ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, দুই উপজেলার রোগীদের স্বাস্থ্য সেবার ভরসা গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারিভাবে শয্যার সংখ্যা মাত্র ৫০টি। প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৪৫ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে ভর্তি হয়েছে ৩০০ জনেরও বেশি রোগী। এ কারনে হাসপাতালে তিল ধরণের ঠাঁই নাই। ডায়রিয়া রোগীদের জন্য ১০টি শয্যা নির্ধারিত থাকলেও তাতে সঙ্কুলান হচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়ে বহু রোগী করিডোর, মেঝেতে ঠাঁই নিয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও শয্যা সংখ্যার অভাবে অনেক রোগীকে আউটডোর থেকে চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। এ ছাড়াও নিজ বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে এমন রোগীর সংখ্যাও কম নয়।
হাসপাতালের ডাক্তার শাহরিয়ার জানান, জনবল ও শয্যা সংকট থাকার পরেও রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা চলছে। বিশুদ্ধ পানি ও অত্যাধিক গরমের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে বলে জানান তিনি।
গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী উপজেলা লবনাক্ততা প্রবন এলাকা। চৈত্র-বৈশাখ মাসে পুকুরগুলোর পানি তলানিতে নেমে যায়। ফলে পুকুরের পানি দূষিত হয়ে যায়। নানা কারণে বাধ্য হয়ে মানুষ দূষিত পানি ব্যবহার করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
তিনি জানান, মাত্রাতিরিক্ত রোগী সামাল দিতে হিমশিম পোহাতে হলেও ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা সামগ্রী পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন ও আইভি স্যালাইন থাকায় তেমন কোন সমস্যা হবে না।