রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
গোপন ব্যথাটি রইলো না গোপন…
(ছোট গল্প)
মো. সাইফউদ্দিন মিলন।।
হঠাৎ করে ব্যক্তিগত একটি কাজে বের হলাম, কাজের ফাকে প্রায় দুই ঘন্টা ত্রিশ মিনিটের মত বিরতিতে ভাগ্যক্রমে এক নিন্মমধ্য বয়সী ঈশ্বরের এক নান্দনিক ঐশ্বর্যের দেখা পেলাম। কিছুক্ষণ চোখে চোখ আড়াআড়ি দৃষ্টি পালাক্রমে এভাবেই কেটে গেলো প্রায় চল্লিশ মিনিট, ভিতরের ক্ষণ কালীন একাকিত্ব দূর করতে কিছুটা সাহস নিয়েই প্রথম আলাপ শুরু করি, কিছুটা ভয় নিয়ে এগিয়েছিলাম বটে তবে এগিয়ে বুঝলাম ভিতরে ভিতরে সেও বেশ এগিয়ে আছে আলাপ চারিতার জন্য।
মজার ব্যাপার হলো প্রথম পরিচয়ে অনেকটা পুরানো পরিচিত বন্ধুদের মত হয়ে গিয়েছিল আমাদের সম্পর্ক, বাহিরে না না এমন কিছু আমি নই বললেও ভিতরে বেশ আনন্দ পেয়েছিলাম যখন তিনি আমার প্রশংসা করলেন, আমি নাকি ম্যাজিক্যাল পার্সন যে কেউ আমার সাথে কথা বললে মন ভালো হবেই। হা হা হা বেশ হেসেছিলাম তাকেও হাসিয়েছি, শিরোনামহীন সম্পর্কটা যখন ধীরে ধীরে একটি পরিচয় খুঁজে পাচ্ছিল, আবার কথা বলার লোভ সামলাতে না পেড়ে যখন ফেসবুকে এড হবো বলে দু’জন সহমত হলাম, ঠিক তখনি বিপত্তি আমিও পড়লাম এক ভয়ংকর লজ্জায়। বন্ধু তো দূরে থাক সে আর কথাই বেশি বলবে না, আমার অপরাধ ছিলো আমি নাকি লিখতে জানি তাই শুনে অবাক হলাম বটে তবে তার যুক্তিটি ফেলে দেয়ার মত নয়। কবিদের মনে নাকি কিছু লুকানো যায় না তাঁরা নাকি সব কবিতার মত করে লোকদের জানিয়ে দেয়, আমি বললাম দোষের কি আমি তো পাপ করতে চাইনা বন্ধুত্ব করতে চাই, তাঁর সাব কথা তিনি তার ব্যথা তাঁর জীবন কোন কিছুই কোন কবিতার কিংবা গল্পের চরিত্রে দেখতে চান না। সুতরাং কোন বন্ধুত্ব নয় আর কথা হবে না এটাই শেষ কথা, আমি তাকে বলেছিলেম তুমি না বললেও আমি তোমার সব ব্যথা বুঝে নিয়েছি তুমি সময় করে আমার আইডিতে ঢুকে দেখে নিও। জানিনে কতটুকু পেরেছি লিখতে…..
আমি তোমার ব্যথা বুঝি আমার ব্যথার মত
জানি তোমার বুকের ভিতর মস্ত বড় ক্ষত।
আমি আমার মত করেই কাঁদি তোমার জন্য
তোমায় আমি বন্ধু ভাবি সুজন করি মান্য।
তোমার মুখ ঢাকা ঐ চোখ ছলছল
বলছ না তো কোন কিছুই তবু কত কথা বলো।
তুমি দীর্ঘশ্বাসে জীবন নাশের হিসাব কষে যাও
তুমি মৃদু হেসে কেমন করে যাতনা যে লুকাও।
তোমার উচ্চ বৃত্ত শরীর জুড়ে নিন্মবিত্তের অসুখ
তোমার ব্যথা গুলো আমার মতই আমিও লুকাই মুখ।
তিস্তা সম হাহাকারে শুকিয়ে তুমি তিল সম তিনে
ব্যথার নদী যায় কি থেমে যতই বলো ভাগ্যটাকে নিয়েছ মেনে।
আমি হাত ছুঁইনি ভাবছ তাতে বুঝিনি তোমার ক্লান্তি
হৃদয় ছোঁয়া মানুষ আমি চোখ ছুঁয়েছি প্রথম দেখেই একটুও টের পাওনি।
চার বোনের এক মস্তবড় ঘরে
সোহাগ করে আনলো তোমার বরে।
ভাগ্যটাকে বদলে দেবে স্বপ্ন নিয়ে চোখে
ঘর ছেরেছে বছর দশেক নববধূ রেখে।
হয়নি পাওয়া স্বপ্নটাকে যেমন করে চাই ছিলো সে
অনেক বেশি যন্ত্রণা তোমায় গেলো দিয়ে।
অবাক হবে দেখলে তুমি তোমার জীবন লেখা
ভাববে আমি হাত না ছুঁয়ে কেমন করে দেখলাম হস্তরেখা।
হৃদয় ছোঁয়া মানুষ আমি হাত ছুঁইবো না মোটে
আমি জানি কষ্ট কেমন তোমার মত আমার ও যে কষ্ট এমন জোটে।