শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১
আমির হোসেন, চরফ্যাশন।।
চরফ্যাশন উপজেলার পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী পুরুষের জন্ম বিরতি করণ পদ্ধতির আড়াই বছরে ২২লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহম্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) মাঠ পর্যায়ে গেলে এমন তথ্য ফুটে উঠেছে।
সরেজমিন পরিদর্শন করে জানা যায়, সরকার পরিবার ও পরিকল্পনা অফিসের মাধ্যমে জন্মবিরতি করণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। নারী-পুরুষের জন্যে স্থায়ী প্রদ্ধতি, দীর্ঘ মেয়াদী, ইনপ্লানল ৩ থেকে ৫ বছর মেয়াদী ও ইনজেক্ট্রাবলস ৩মাস মেয়াদী প্রদ্ধতি রয়েছে। তার মধ্যে ব্যবহারিক দিক থেকে নারী পদ্ধতিটাই বেশী ব্যবহৃত হচ্ছে। স্থায়ী পদ্ধতিকরণ (বন্ধা করণ) নারী ও পুরুষ যদি এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে উভয়কে ২৩শ টাকা প্রদান এবং নারী হলে শাড়ী ও পুরুষ হলে ১টি লুঙ্গী দেয়া হয়।
অফিস সহকারী মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের এই পদ্ধতি এখন আর নেই বললেই চলে। কিন্তু দেখা যায় সরকারি ভাবে এই প্রদ্ধতির জন্যে বছরের লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। এই বরাদ্দের কোন তথ্য অফিসে নেই বলে উপজেলা পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. ফোরকান উদ্দিন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, অনলাইনের মাধ্যমে অধিদপ্তরের প্রেরণ করা হয়। এমনকি বছরে কতটি নারী পুরুষ জন্মবিরতি করণ প্রদ্ধতি ব্যবহার করেন এমন তথ্যও অফিস দিতে পারেনি। ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে মোট দীর্ঘ মেয়াদী ৩৬০জন ও ৩ বছর মেয়াদী ৯২০ জনের তথ্য কাগজ কলমে রয়েছে। কোন নারী পুরুষের নাম অফিসে সংরক্ষণ করা হয়না। বছরও ভিত্তিক কোন তথ্য নেই বলে জানান অফিস সহকারী মিজানুর রহমান।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে এই প্রদ্ধতির জন্যে ৮লাখ টাকা, অফিসের কর্মকর্তাদের যাতায়াতের জন্যে টিএ ও ডিএ ১লাখ ৮৪হাজার ৮শ টাকা, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৯লাখ টাকা, টিএ ডিএর জন্যে ৩লাখ ৮হাজার ৪শ টাকা, ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৫লাখ টাকা টিএ ডিএ ৫১হাজার ৬শ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগন কোন খাতে কত টাকা ব্যয় করা হয়েছে তা দিতে নারাজ। কর্মকর্তা বলেন, এই সকল তথ্য অধিদপ্তর থেকে নিতে হবে। আমরা অনলাইনে পাঠিয়ে দিয়েছি।
স্থানীয় একাধিক ভোক্তভোগী বলেন, আমাদের জন্যে যে বরাদ্দ হয়ে অফিস আমাদেরকে জন্যে তাদের কোন ব্যয় নেই। ফলে আড়াই বছরের বন্ধাকরণ ও দীর্ঘ মেয়াদী ২২লাখ টাকা অফিস আর্থসাৎ করেছে।
উপজেলা পরিবার কল্যাণ সহকারীর ৬৯পদের মধ্যে রয়েছে ৪৮জন, এফডব্লিউ ভি‘র পদ রয়েছে ১৭ কর্মরত ১১জন। পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক রয়েছে ১২জন। এই পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক ১২জন তদারকী কর্মকর্তা হিসাবে কাজ করার কথা থাকলেও অধিকাংশ পরিদর্শকের বিরুদ্ধে কাজে ফাঁকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এফ ডব্লিউ ভিতে কর্মরত সেবিকাগন ইউনিয়ন ভিত্তিক মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে অবস্থান করে সরকারি ভাবে সেবা দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। দেখা যায়, ওই কল্যাণ কেন্দ্র অবস্থান না করে চরফ্যাশন সদরে বসবাস করেছেন। ফলে ইউনিয়ন ভিত্তিক মা ও শিশুরা কোন সেবা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এই ব্যপারে উপজেলা পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. ফোরকান উদ্দিন বলেন, বরাদ্দের হিসাব আমার কাছে নেই তা অধিদপ্তরে রয়েছে। লো-পাটের বিষয়টি তিনি এরিয়ে যান। ভোলা জেলা কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান(ভারপ্রাপ্ত)বলেন, সকল তথ্যত অফিসে রয়েছে। আত্মসাতের বিষয়টি অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।