শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১
আমির হোসেন, চরফ্যাশন (ভোলা)।।
চরফ্যাশনে ১৩ নং উত্তর চর আইচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষার ফি বাবত গড়ে ১০০ টাকা করে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উক্ত বিদ্যালয় নির্ধারিত টাকা দিতে না পারায় কিছু শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুফিয়া বেগম এসব টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা অভিযোগ করেছেন।
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী শাওন জানান, এ পর্যন্ত ৬ টি অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষায় সে অংশগ্রহন করেছে। এ জন্য প্রধান শিক্ষিকা সুফিয়া বেগমকে ১০০ টাকা ফি দিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছে। তার সহপাঠিরা যারা ফি দিতে পারেনি তাদের অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি।
শাওনের মা শিল্পী বেগম অভিযোগ করেন, অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষার জন্য স্কুল থেকে শুধুমাত্র প্রশ্নপত্র দেয়া হয়েছে। উত্তরপত্র শিক্ষার্থীরা নিজনিজ খরচে সংগ্রহ করেছেন। শুধুমাত্র প্রশ্নপত্রের জন্য ১০০ টাকা খরচ হয়না- বিষযটি প্রধান শিক্ষক সুফিয়া বেগমকে জানিয়ে ৬০ টাকা ফি দিয়েছিলাম কিন্তু তিনি সে টাকা ফেরত দিয়েছেন। পরে নিরুপায় হয়ে ১০০ টাকা দিয়ে ছেলেকে পরীক্ষা দিতে পাঠিয়েছি। শাওনের মতো ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিয়া, তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী খাদিজা, খাদিজার মা শাহিদা বেগম, ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানজিলা, তানজিলার বাবা এবং এই বিদ্যালয়ের জমিদাতা মো. জামালসহ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষার ফি বাবদ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রধান শিক্ষিকা ১০০ টাকা করে আদায় করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৬ জন শিক্ষকের বিপরীতে ৪০০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, করোনাকালীন সীমাবদ্ধতা এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসের জনবল সংকটের ফলে সৃষ্টি দুর্বল তদারকির সুযোগে গোটা উপজেলায় বিচ্ছিন্নভাবে কিছু অতিলোভী প্রধান শিক্ষক অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষার মতো নানা অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন হারে টাকা আদায় করছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে ১৩ নং উত্তর চর আইচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুফিয়া বেগম জানান, স্থানীয় গ্রুপ তার বিরুদ্ধে ষঢ়যন্ত্র করে আসছে। অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষা কিংবা কোন কারনে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার কথা সঠিক নয়।
চরফ্যাশন উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শফিকুল ইসলাম বলেছেন, কোন পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।