বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ, ১৪৩১
অনলাইন ডেস্ক।।
প্রায় ৪ মাস ধরে বিদ্যালয়ে না গিয়েও নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে পাবনার সুজানগর উপজেলার সাগরকান্দি ইউনিয়নের খলিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে। বুধ ও বৃহস্পতিবার (০৯ জুন) দুদিন বিদ্যালয়ে গিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে। ওই সময় তাকে বিদ্যালয়ে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে আনিসুর রহমান খলিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে আনিসুর রহমান শিক্ষকতার পাশাপাশি জেকা বাজার লিমিটেড নামে অবৈধ একটি এমএলএম কোম্পানির পাবনা শাখার এজেন্ট হিসেবে যুক্ত হন। এ সময় স্থানীয় মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
পরবর্তীতে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ওই কোম্পানির প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ার পর গ্রাহকেরা টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য চাপ দেয়। পরে কোম্পানির স্থানীয় খলিলপুর শাখাটি বন্ধ করে কোম্পানির ফাইন্যান্স ডিরেক্টর সাইদুল বাশার ও এজেন্ট আনিস মাস্টার উধাও হন।
জাহাঙ্গীর আলম ও নূর আলী নামে খলিলুপর উচ্চ বিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষক জানান, এক লাখ টাকায় প্রতিমাসে ৩০ হাজার টাকা করে লাভ হবে এই প্রলোভনে পড়ে শিক্ষক আনিসের মাধ্যমে আমরা এমএলএম কোম্পানি জেকা বাজারে কয়েক লাখ টাকা বিনিয়োগ করি। কিন্তু অবৈধ এই কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে স্থানীয় গ্রাহকদের চাপে শিক্ষক আনিস মাস্টার ও বাশার কয়েক মাস আগে এলাকা থেকে উধাও হয়েছেন।
বিদ্যালয়ে না গিয়েও নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তোলনের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে খলিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মতিনুজ্জামান শুক্রবার (১০ জুন) জানান, গত মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে ৩ দিনের ছুটির দরখাস্ত দিয়ে প্রায় ৪ মাস ধরে বিদ্যালয়ে না এসেও নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন শিক্ষক আনিসুর রহমান। একাধিকবার ওই শিক্ষককে মোবাইল ফোনে বিদ্যালয়ে নিয়মিত আসার জন্য বলা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হচ্ছেন না।
অভিযুক্ত শিক্ষক আনিসুর রহমান বিদ্যালয়ে গত কয়েক মাস উপস্থিত না হওয়ার বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে শুক্রবার মোবাইলে জানান, যেখানে আমার নিজের জীবনেরই নিরাপত্তা নেই সেখানে আমি কীভাবে বিদ্যালয়ে যাব।
এ সময় তিনি আরো বলেন, আমি স্থানীয় মনসুর রহমান নামক এক ব্যক্তির মাধ্যমে জেকা বাজার নামে ওই কোম্পানিতে যুক্ত হই। আমিসহ পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের প্রায় ২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে এখন দিশেহারা। কোম্পানি থেকে টাকা ফেরত পেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২০ তারিখে পাবনা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমি অবগত হওয়ার পরপরই অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) করার নির্দেশনা দিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রওশন আলী জানান, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম, খোঁজ নিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।