শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ, ১৪৩১
রূপালী বার্তা।।
নাক ডাকা খুব প্রচলিত একটি সমস্যা। শিশু থেকে বৃদ্ধ, সব বয়সের মানুষেরই এটি হয়ে থাকে। যদিও বিভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে এর কারণও ভিন্ন। আমাদের শরীরে নাক থেকে শুরু করে ভেতরে যে শ্বাসপথ রয়েছে সেটি দিয়ে যদি বাতাস ঠিকমতো না প্রবেশ করে, তাহলে এই সমস্যা হতে পারে।
এই পথটি সরু হয়ে গেলে বা কোথাও কোনো বাধা পেলে এ সমস্যা হয়। ছোট শিশুর ক্ষেত্রে নাকে সর্দি থাকলে বা নাকের পেছনে এডিনয়েড থাকলে এ সমস্যা হতে পারে।
মাঝ বয়সে নাকের পর্দা বাঁকা বা নাকের পলিপের কারণেও এ সমস্যা হতে পারে। বয়স বেড়ে গেলে সাধারণত দেখা যায়, চল্লিশোর্ধ্ব মানুষের এই বাতাসের পথ (এয়ারওয়ে) নরম হয়ে যায়। এর ফলেও সমস্যা হয়। এছাড়া ওজন বাড়ার কারণেও নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে। ওজন বাড়লে বাতাস চলাচলের পথের পাশে চর্বি জমে। এতে করে পথটি নরম ও সরু হয়ে যায়।
যখন বাতাস চলাচলের রাস্তা কমে যাওয়ার ফলে শরীরের অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়, তখন এটা বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এ রোগের চিকিৎসা- যদি এডিনয়েডের ফলে সমস্যা হয়, তখন এটি অপসারণ করতে হয়। পলিপের কারণে হলেও অপসারণ করে ফেলতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, গলার ভেতরে পেছনের দিকটা সরু হয়ে আছে, যেটাকে ক্রাউডিং অব দ্য ওরোফেরিংস বলে। বিশেষ করে যাদের ওজন বেশি, তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা হয়। যদি ওজন কমিয়ে আনা যায়, তবে এ সমস্যার সমাধান হতে পারে।
নাক ডাকাকে খুব হালকাভাবে না নিয়ে এটা হওয়ার কারণ নির্ণয় করা দরকার। যেকোনো বয়সেই হোক, কারণটাকে বের করে নিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। সাধারণত মেডিকেল চিকিৎসায় এটি ভালো হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে সার্জারি খুব কমই লাগে।
কি কি উপায় অবলম্বন করে এটা কমাবেন: ১. ঘুমানোর পজিশন চেঞ্জ করুনঃ চিৎ হয়ে শোবেন না, তাহলে জিভের পিছনের দিক টাগরায় লেগে বেশি নাক ডাকে। যে কোন পাশে কাত হয়ে ঘুমান।
২. খোলা নাসারন্ধ্রঃ নাক বন্ধ থাকলে বেশি নাক ডাকে মানুষ। তাই ঘুমানোর আগে গরম জলে স্নান করুন। নাক ভাল করে ঝেড়ে পরিষ্কার করে শুতে যান। প্রয়োজনে ন্যাজাল ড্রপ ব্যবহার করুন।
৩. অ্যালকোহল বন্ধ করুনঃ অ্যালকোহল গলার পিছনের দিকের মাংসের স্থিতিস্থাপকতা কমিয়ে দেয়। ঘুমানোর চার পাঁচ ঘন্টা আগে একেবারেই অ্যালকোহল খাবেন না।
৪. পানির ভারসাম্য বজায় রাখুনঃ সারা দিনে শরীরে পানি ঠিকমতো পৌঁছলে নাকও হাইড্রেটেড থাকে। ফলে নাক কম ডাকে মানুষ।
ডা: কে.এম. জাহিদুল ইসলাম
এমবিবিএস(ঢাকা), বিসিএস (স্বাস্থ্য)
এমএস (অর্থোপেডিক সার্জারী) অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল) ঢাকা।