শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১
অনলাইন ডেস্ক।।
প্রায় ১৬ বছর আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শরীফনগর গ্রামের মৃত শামছুদ্দিনের ছেলে ইমদাদুল হক ইমন। দীর্ঘদিন ধরে তার কোনো হদিস মিলছিল না। পরিবারের সদস্যরাও প্রায় আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন।
কিন্তু অবশেষে দীর্ঘ ১৬ বছর পর তার সন্ধান পেয়েছেন মা আয়েশা আক্তার। তাও আবার জীবিত নয়। মৃত ছেলের লাশের সন্ধান পেয়েছেন। পুলিশ তার মাকে লাশের সন্ধান দিলে আঁতকে উঠেন তিনি।
নিখোঁজের সময় ইমনের বয়স ছিল (১৯)। ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ইমনের লাশটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমাগারে রয়েছে। মঙ্গলবার তার স্বজনরা লাশ আনতে সেখানে যান।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ইমন প্রায় ১৬ বছর আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। এরপর দীর্ঘদিন ধরে তার মা আয়েশা আক্তার ও ভাই জিয়াউল হক বিভিন্ন স্থানে ইমনকে খোঁজাখুঁজি করেছেন। কিন্তু সন্ধান পাননি। খুঁজতে খুঁজতে আয়েশা আক্তার তার ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন।
এদিকে কয়েকদিন আগে রাজধানীর কাফরুল থানা পুলিশ একটি রক্তাক্ত লাশ পায়। লাশের সঙ্গে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তারা ইমনকে শনাক্ত করেন। পরে আজমিরীগঞ্জ থানায় ছবি পাঠালে ইমনের পরিবারের সদস্যরা থানায় এসে লাশটি শনাক্ত করেন।
দীর্ঘ ১৬ বছর খুঁজে ফেরা ছেলের রক্তাক্ত লাশের খবর পাওয়ার পর ইমনের মা ভেঙে পড়েছেন। তিনি বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় লাশ নিয়ে আসার খরচও তাদের ছিল না। খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা টাকা দিয়ে সাহায্য করে ইমনের বড় ভাই জিয়াউল হককে লাশ আনার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছেন।
আজমিরীগঞ্জ থানার ওসি মো. নূরুল ইসলাম জানান, প্রায় এক সপ্তাহ আগে ইমন ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। কাফরুল থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের হিমাগারে রেখেছে। জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা অনুযায়ী তারাই আজমিরীগঞ্জ থানায় খবর দিয়েছে।
ইমনের পরিবারের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, তিনি প্রায় ১৬ বছর আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন। এতদিন পর রক্তাক্ত লাশ শনাক্তের খবর পাওয়ায় মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা ভেঙে পড়েছেন। পুলিশ মরদেহ আজমিরীগঞ্জ পাঠানোর জন্য কাজ করছে। আশা করা যায় বুধবার বা বৃহস্পতিবারের মধ্যেই তার লাশ আইনি প্রক্রিয়া শেষে আজমিরীগঞ্জে পৌঁছবে। ইমনের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তিনি ঢাকার মিরপুরে পল্লবী আবাসিক এলাকায় বসবাস করতেন।