বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ, ১৪৩১
রূপালী বার্তা।।
পেয়ারা বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ফল। কোনো কোনো অঞ্চলে গয়া, গৈয়া, গৈয়ম, সবরি এসব নামে পরিচিত। স্বাদে, গন্ধে আর পুষ্টিমাণ বিবেচনায় এর তুলনা নেই। সে কারণে ছোট বড় সবার কাছে অতি লোভনীয়। বরিশাল অঞ্চল পেয়ারার জন্য বিখ্যাত। স্বরুপকাঠিকে বলা হয় পেয়ারার স্বর্গরাজ্য। ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, বি-বাড়িয়া, কুমিল্লা ও খাগড়াছড়িতে পেয়ারা ভালো জন্মে। অন্য এলাকাতেও চাষ হয়। আমাদের দেশে বিভিন্ন জাতের পেয়ারা পাওয়া যায়।
স্থানীয় জাতের মধ্যে স্বরুপকাঠি, মুকুন্দপুরি, কাঞ্চননগর অন্যতম। বেশ কয়েকটি উচ্চফলনশীল জাতও রয়েছে। আমরা সাধারণত পরিপক্ক হলেই পেয়ারা খাই। কেউ আবার কাঁচা অবস্থায় লবণ-মরিচ দিয়ে বানিয়ে খেতে পছন্দ করেন বিশেষ করে মেয়েরা।
পেয়ারা দিয়ে তৈরি করা যায় জ্যাম, জেলি, জুসের মতো দামি খাবার। বহুগুণে গুণান্বিত এ ফলকে বলা হয় ‘বাংলার আপেল’।
পেয়ারায় ভিটামিন-সি রয়েছে যথেষ্ট, যার পরিমাণ আমড়ার ২ গুণ, কামরাঙ্গার ৩ গুণ, লেবুর ৪ গুণ এবং কমলা ৫ গুণেরও বেশি। সেক্ষেত্রে আমলকির পরই এর স্থান। আসলে পেয়ারা হচ্ছে ভিটামিন সি’র কারখানা।
পেয়ারায় আছে ক্যান্সার প্রতিরোধক উপাদান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পলিফেনল। যার সুবাদে প্রোস্টেট ক্যান্সার এবং মেয়েদের ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
নিয়মিত পেয়ারা খেলে চোখে ছানিপড়ার আশঙ্কা কম থাকে। অ্যাজমা, কোষ্ঠকাঠিন্য, গলায় কফ জমানো থেকে বাঁচায় এই সুস্বাদু ফল।
রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। হার্ট এবং মস্তিষ্ককে করে সুরক্ষা। এছাড়া ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের মতো ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করে দেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শরীর সুস্থ রাখার জন্য মানবদেহে ভিটামিন-সি খুবই দরকারি। অথচ অনেক লোক এ জাতীয় ভিটামিন থেকে বঞ্চিত। এর অভাবে মাড়িতে ঘা হয় এবং ফুলে যায়, দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত ঝরে, ফলে অকালে দাঁত পড়ে যায়।
অতিরিক্ত ঘাটতি দেখা দিলে স্কার্ভির মতো কঠিন রোগের সৃষ্টি হয়। এসব সমস্যা এড়াতে ভিটামিন-সি’র বিকল্প নেই। তাই প্রতিদিন আমাদের কিছু না কিছু এ জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। সে সাথে যদি পেয়ারা থাকে তাহলে তো কথাই নেই।
ডা: কে.এম. জাহিদুল ইসলাম
এমবিবিএস(ঢাকা), বিসিএস (স্বাস্থ্য)
এমএস (অর্থোপেডিক সার্জারী) অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল) ঢাকা।